পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

আইনজীবী রজত দে খুনে দোষী সাব্যস্ত স্ত্রী অনিন্দিতা

খুনের তথ্য প্রমাণে ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্স, সোশাল মিডিয়ায় কথোপকথন ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে ।

দোষী সাব্যস্ত স্ত্রী অনিন্দিতা
রজত দে খুনে দোষী সাব্যস্ত অনিন্দিতা

By

Published : Sep 14, 2020, 4:09 PM IST

বারাসত, 14 সেপ্টেম্বর : বহুল চর্চিত আইনজীবী রজত দে খুনের মামলায় অভিযুক্ত স্ত্রী অনিন্দিতা পাল (দে)-কে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসত আদালত । এদিন সকালে তাঁকে তোলা হয় বারাসত আদালতের ফাস্ট ট্রাক থার্ড কোর্টের এজলাসে । এরপরই বিচারক সুজিতকুমার ঝা এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন অনিন্দিতাকে । 16 সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বুধবার সাজা ঘোষণা হবে এই খুনের মামলার ।

এদিন সকালেই বারাসত আদালতে হাজির হয়ে গেছিলেন রজতের বাবা সমীর কুমার দে । ছিলেন রজতের আইনজীবী বন্ধুরাও । সকলেই চাইছেন খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত অনিন্দিতার সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি হোক । আগামী বুধবার বিচারক কী সাজা দেন এখন সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন তাঁরা ।

2018 সালের 25 নভেম্বর নিউটাউনের DB ব্লকে আইনজীবী রজত দে-কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় । এরপরই রজতের পরিবারের তরফে পরিকল্পিত খুন বলে অভিযোগ করা হয় । সঠিক তদন্তের দাবিতে সরব হন তাঁর আইনজীবী বন্ধুরাও । শেষে মৃতের বাবার দায়ের করা খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে 1 ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁরই আইনজীবী স্ত্রী অনিন্দিতা পাল(দে)-কে ।

গ্রেপ্তার হওয়ার এক বছর নয় মাস চোদ্দো দিনের মাথায় রায় শোনাল বারাসাত আদালত । জন মানসে আলোড়ন ফেলা রজত দে হত্যা মামলার পরতে পরতে ছিল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ । খুনের তথ্য প্রমাণে ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্স, সোশাল মিডিয়ায় কথোপকথন ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে । গ্রেপ্তার হওয়ার দশ মাসের মাথায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বারাসত আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন অনিন্দিতা পাল(দে) । এরপর আজ স্বামীকে খুনের মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসত আদালত।

আগামী বুধবার বিচারক কী সাজা দেন এখন সেই অপেক্ষাতেই সবাই

আরও পড়ুন :রজত খুনের মামলায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পুলিশের

এদিকে,ছেলের খুনের মামলায় বউমা অনিন্দিতাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করায় খুশি সমীর কুমার দে । তিনি বলেন, “এটা হওয়ার কথাই ছিল । আমার ছেলের পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছিল । আদালতের উপর আমাদের প্রথম থেকেই আস্থা রয়েছে । আগামী দিনেও থাকবে ।” ছেলের খুনির সাজার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,"ওরঁ(অনিন্দিতা) ফাঁসি চাই । কারণ এই ধরনের মহিলা বাইরে থাকলে অন্য কারও ক্ষতি করতে পারে । অনিন্দিতা যে রজতকে খুন করেছিল তা আজ প্রমাণিত হল ।" তবে,প্রথম দিকে এই খুনের মামলায় পুলিশের ভূমিকায় যে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন তা বলতেও ভোলেননি সমীরবাবু ।

মামলার সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ 302 ও 201 ধারায় অনিন্দিতা-কে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক । আমরা আদালতের সামনে ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্স ও মেডিকেল বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলাম । এছাড়া মোবাইলের চার্জারের তার পেঁচিয়ে যে রজতকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছিল তার তথ্যও আমরা আদালতে পেশ করেছি । আমরা ওঁর(অনিন্দিতা)সর্বোচ্চ সাজাই চাইব আদালতের কাছে ।”

অন্যদিকে,অনিন্দাতার আইনজীবী জ্যোতির্ময় অধিকারী বলেন,"302 ধারায় তাঁর মক্কেলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে । 201 ধারা এক্ষেত্রে প্রমানিত হয়নি ।" তাঁর দাবি, “ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্সের কোনও উপযুক্ত তথ্য পেশ করতে পারেননি সরকারি আইনজীবী । পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করেই তাঁর মক্কেলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে । বিচারের কপি আরও ভালো করে দেখে তারপর বিশদে বলতে পারব । 16 সেপ্টেম্বর কী সাজা ঘোষণা হয়, তার উপর উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়ে মনস্থির করা হবে ।”

ABOUT THE AUTHOR

...view details