পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সার, দু'বছরেও চালু হল না হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়

মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় দুই বছর । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ইটও গাঁথা হয়নি ।

হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়
হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়

By

Published : Oct 7, 2020, 6:57 PM IST

Updated : Oct 7, 2020, 7:38 PM IST

চাঁদপাড়া, 7 অক্টোবর : সালটা ছিল 2018 ৷ কয়েকমাস পরেই 2019 এর লোকসভা নির্বাচন ৷ 15 নভেম্বর মতুয়া বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের শততম জন্মদিবস পালন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বড়মার হাতে বঙ্গবিভূষণ খেতাব তুলে দেন । মতুয়াদের মন জয় করতে অনুষ্ঠান মঞ্চে বড়মাকে পাশে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে তৈরি করা হবে বিশ্ববিদ্যালয় । ওই সভা মঞ্চ থেকেই সেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য জায়গাও ঘোষণা করেন ৷ তিনি আরও বলেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাসও করা হবে কৃষ্ণনগরে ৷

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যে চাঁদপাড়ায় কৃষি দপ্তরের জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সাইনবোর্ড বসিয়ে দেন গাইঘাটার BDO বিব্রত বিশ্বাস ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস । সেদিন মুখ্যমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে গাইঘাটার BDO বিব্রত বিশ্বাস ও পঞ্চায়েত সমিতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নোডাল অফিসারের দায়িত্ব দেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "পিছিয়ে পড়া গাইঘাটা, বনগাঁ, বাগদার পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য আর দূরে কোথাও যেতে হবে না । 2019 শিক্ষাবর্ষ থেকেই চালু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন ।" 12 জানুয়ারি 2019 সালে বারাসতের যাত্রা উৎসবে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাসও করে মুখ্যমন্ত্রী ৷ তারপর প্রায় দু'বছর কেটে গিয়েছে । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ইটও গাঁথা হয়নি । বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে মোট নয় একর জমি বরাদ্দ হয়েছে। সেই জমিতে কেবল পাঁচিল দেওয়া হয়েছে। সেই পাঁচিলও এক বছরের মধ্যে ভেঙে পড়েছে । বর্ষার জল ও ঘাসের মধ্যে পড়ে রয়েছে সাইট ফর ইউনিভারসিটি লেখা সেই সাইনবোর্ড । কবে বিশ্ববিদ্যালয় চালু হবে তা জানেন না কেউই ।

হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের বিষয়টিকে তৃণমূলের রাজনৈতিক চমক বলে মন্তব্য করেছেন বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের নাতি তথা BJP সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুরবাড়িতে আসেননি । লোকসভা ভোটের আগে বড়মা'র যখন 98 বছর বয়স, তখনই রাজ্য সরকার ঘটা করে শততম জন্মদিনের অনুষ্ঠান করল । মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করবে । দু'বছরে কিছুই করেনি । মতুয়াদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নয়, নিজের ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা বলেছেন । আসলে সবই ছিল নির্বাচনী চমক।" যদিও সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের কার্যকরী সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা ধ্যানেশনারায়ণ গুহ অবশ্য শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য মানতে নারাজ । তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যখন ঘোষণা করেছেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয় হবেই । আমি যতটুকু জানি, জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে । তারপর কোরোনার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।"

দু'বছরেও চালু হল না হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নোডাল দায়িত্ব প্রাপ্ত গাইঘাটার BDO-কে প্রশ্ন করা হলে সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি । অন্যদিকে পূর্ত ও উচ্চশিক্ষা দপ্তরের উপর দায় চাপিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস । তিনি বলেন, "আমাদের দায়িত্ব ছিল কেবল জমি বাছাই করা । সেটা আমরা করে দিয়েছি । বাকিটা পূর্ত ও উচ্চশিক্ষা দপ্তর জানে । কবে বিশ্ববিদ্যালয় চালু হবে তা আমি বলতে পারব না ।"

মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন 2019-র শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন চালু হওয়ার । কিন্তু প্রায় দু'বছর কেটে গেলেও চালু হয়নি সেই বিশ্ববিদ্যালয় । নির্ধারিত জমিতে পাঁচিল দেওয়া হলেও সেই নতুন পাঁচিল আজ ভেঙে পড়েছে । তাই মতুয়া বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ৷

Last Updated : Oct 7, 2020, 7:38 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details