দত্তপুকুর, 1 সেপ্টম্বর: বেআইনি বাজি কারখানা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মিলল যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বিশেষ যোগ ! উঠে এল হাথরসের নাম ৷ চাঞ্চল্যকরভাবে জানা গিয়েছে, সেখান থেকে দত্তপুকুরে আসত বিস্ফোরক তৈরির রাসায়নিক ৷ এর আগে দত্তপুকুরের বেআইনি বাজি কারখানা বিস্ফোরণে মুর্শিদাবাদের যোগ মিলেছিল ৷ এবার মিলল যোগী রাজ্যের নাম !
তবে এ নিয়ে বারাসত পুলিশ জেলার এসপি ভাস্কর মুখোপ্যাধায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷ বারবার ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি ৷ তবে দত্তপুকুর থানার নতুন আইসি সুজিত কুমার পাতি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "আপনার কাছ থেকে বিষয়টি প্রথম শুনলাম ৷ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে ৷"
সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশ থেকে কুরিয়ারে রাসায়নিক পদার্থ আসত দত্তপুকুরে ৷ একাধিক হাত বদল হয়ে সেই রাসায়নিক পৌঁছে যেত কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের অখ্যাত দত্তপুকুরের এই মোচপোল গ্রামে ৷ অর্থাৎ দিনের পর দিন এভাবেই মোচপোল গ্রামের বিভিন্ন গোডাউনে রাসায়নিক মজুত করা হত ৷ আর এর রাসায়নিক আমদানি এবং মজুতের নেপথ্যে রয়েছেন বিস্ফোরণে নিহত কেরামত আলি ৷
কেরামত আলি এবং হাথরস থেকে আসা কুরিয়ার: তিনিই যোগী রাজ্য থেকে রাসায়নিক আনার বরাত দিতেন ৷ তবে, এক্ষেত্রে লেনদেন সরাসরি নগদ টাকায় হত না বলেই খবর ৷ ঝুটঝামেলা এড়াতে কারবারিরা বেছে নিতেন অনলাইন মাধ্যম ৷ কখনও কখনও চেকেও লেনদেন হত বলে সূত্রের খবর ৷
আরও খবর: মোচপোল যেন জতুগৃহ! কেরামতের আরও একটি রাসায়নিক ভর্তি গুদামের হদিশ মিলল
আরও খবর, এই রাসায়নিক অথবা বারুদ সরবরাহের মূলে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশেরই দুই কিংপিন ! একজন ভাস্কর পণ্ডিত ৷ অন্যজন নীরজ শর্মা ৷ নীরজ, ভাস্করের ব্যবসায়িক অংশীদার ৷ তাই এই দু'টি নাম নিয়ে জোর গুঞ্জন চলছে মোচপোল গ্রামের আনাচে-কানাচে ৷ গ্রামবাসীদের অনেকে বলছেন, "বিস্ফোরণে নিহত কেরামত আলি, জিরাত শেখরা কেবল বোরে মাত্র ! আসল খিলাড়ি এরাই । মোচপোল গ্রামে বাজি-বারুদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক যোগী রাজ্যের এই দুই কারবারি ৷ সেখানে বসেই যাবতীয় কাজকর্ম কন্ট্রোল করছেন তাঁরা ৷" তবে এনিয়ে চর্চা হলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চায়নি ৷
এদিকে, ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির হাতে এসেছে কুরিয়ার সংস্থার একটি ভাউচার ৷ তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, হাথরসের একটি ঠিকানা থেকে রাজ্যের ডানকুনিতে আরেকটি কুরিয়ার সংস্থার অফিসে রাসায়নিক পাঠানো হয়েছে ৷ সেখান থেকে হাত বদল হয়ে রাসায়নিক সরাসরি আসত মোচপোল গ্রামে ৷
কী ধরনের রাসায়নিক পাঠানো হচ্ছে, কার নামে আসছে, পরিমাণ, মোট মূল্য ৷ সবকিছুই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লেখা থাকত ভাউচারে ৷ নজর এড়াতে জিএসটি বাবদ টাকাও দিতেন কারবারিরা ৷ সেই তথ্যও লেখা থাকত ভাউচারে ৷