পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

অন্তঃসত্ত্বাকে রক্ত দিয়ে বাঁচালেন দুই যুবক - বারাসত

লকডাউনের কারণে মিলছিল না রক্ত । জীবন সংশয়ে পড়ে গেছিলেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা । রক্ত দান করে জীবন বাঁচালেন দুই যুবক ।

aa
রক্ত দান

By

Published : Apr 26, 2020, 3:35 PM IST

বারাসত, 26 এপ্রিল: প্রয়োজনের তুলনায় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম ছিল অন্তঃসত্ত্বার । ঠিক সময়ে রক্ত না দিলে জীবনহানির আশঙ্কাও ছিল । লকডাউনের কারণে কিছুতেই জোগাড় হচ্ছিল না বিরল A নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত । অবশেষে সেই গ্রুপের রক্ত দিয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বার জীবন বাঁচালেন দুই যুবক । উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসতের ঘটনা । তাঁদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সবাই । প্রশংসায় পঞ্চমুখ যুবতির পরিবারও ।

যুবতির নাম দেবযানী সাহা (দে) । বয়স 34 । বাড়ি বারাসত পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বুড়িপুকুর রোড়ের ন'পাড়া এলাকায় । গতকাল সকালে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । দেরি না করে বারাসতের 35 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে । পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, দেবযানীর শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম রয়েছে । তাঁকে দ্রুত দুই ইউনিট রক্ত দেওয়া প্রয়োজন । না হলে জীবনহানির সম্ভাবনা রয়েছে । এরপরই বিরল A নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের খোঁজ শুরু করেন পরিবারের লোকরা । কিন্তু হন্যে হয়ে খুঁজলেও মেলেনি সেই গ্রুপের রক্ত । অনেকে রক্ত দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলেও পরে লকডাউনের কারণে পিছু হটতে বাধ্য হন । কী করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না পরিবারের সদস্যরা । এমন সময়ে ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে আসেন বারাসতের DYFI নেতৃত্ব । পরিবারকে আশ্বস্ত করে জানানো হয়, পরিচিত দুই যুবক ওই গ্রুপের রক্ত দিতে রাজি । সেই মতো অরিজিৎ দাস ও কৌস্তভ দাস নামে বারাসত ও মধ্যমগ্রামের দুই যুবক এগিয়ে আসেন রক্ত দিতে । বারাসত হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দেন তাঁরা । গতরাতে দেবযানীকে দেওয়া হয়েছে সেই রক্ত ।

দেবযানী সাহা (দে)

হাসপাতাল সূত্রে খবর , দুই ইউনিট রক্ত দেওয়ার পর দেবযানী এখন সুস্থ । আজ সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । এই বিষয়ে অরিজিৎ ও কৌস্তুভ বলেন, "লকডাউনের জেরে ঠিকমতো রক্তদান শিবির না হওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় রক্তের সংকট দেখা দিচ্ছে । সেই জায়গায় ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে রক্ত দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে । আমাদের রক্ত যদি কারোর জীবন বাঁচাতে পারে, তার চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না । মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি । এটাই সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হওয়া উচিত ।"

এদিকে, এবিষয়ে দেবযানীর ভাশুর কুন্তল সাহা বলেন, "ওই দুই যুবকের উপকার কখনওই ভুলতে পারব না । যেভাবে তাঁরা বিপদের সময় পাশে এসে দাঁড়ালেন, রক্ত দিয়ে ভাইয়ের স্ত্রীর জীবন বাঁচালেন, তা মনে রাখার মতো । ওই দুইজনের জন্যই দেবযানী আজ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন ।" অন্যদিকে যুবকদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন রক্ত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমীরণ দাস । বলেন, "ওই যুবতির পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করি রক্তদাতার খোঁজ করতে । তখনই ওই দুই যুবক এগিয়ে আসেন রক্ত দেওয়ার জন্য । এভাবেই মানুষ মানুষের বিপদে এগিয়ে আসুক সেটাই আমরা চাই । "

ABOUT THE AUTHOR

...view details