আমডাঙা, 31 অক্টোবর: গা-ঢাকা দিয়েও শেষরক্ষা হল না । নৈহাটি-কাণ্ডে অবশেষে পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত-সহ তিনজন । ধৃতদের নাম আসিফুল রহমান ওরফে বাচ্চা এবং ফারুক হোসেন এবং তাপস দে (Two accused arrested) । ধৃতদের মধ্যে এই বাচ্চা'ই তৃণমূল কর্মী জাকির হোসেন খুনের মূল অভিযুক্ত বলে পুলিশের দাবি (Naihati Murder Case) । ঘটনার দিন দলবল নিয়ে শিবদাসপুরের কন্দপুকুর গ্রামে জাকিরের উপর হামলা চালায় এই বাচ্চা'ই । বোমা ও গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর (Naihati Clash) ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দু'জনের কাছ থেকে দুটি রিভলবার ও এক রাউন্ড কার্তুজ এবং একটি নম্বরহীন বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । যে দু'টি রিভলবার উদ্ধার হয়েছে, তা দিয়েই 'অপারেশন ব্ল্যাক' সংগঠিত করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা । ধৃতদের জেরা করে বাকি দুষ্কৃতীদেরও হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে ।
উল্লেখ্য, শনিবার ভর সন্ধ্যায় নৈহাটির শিবদাসপুরে বোমা ও গুলিতে খুন হন এলাকার প্রতিবাদী যুবক এবং তৃণমূল কর্মী জাকির হোসেন । সেদিন পাড়ারই একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি । তখনই মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা দুটি বাইকে এসে আচমকা হামলা চালায় জাকিরের উপর । প্রথমে তাঁকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় । রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণে বাঁচতে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি । কিন্তু তারপরও পিছু ধাওয়া করে জাকিরকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি করে দুষ্কৃতীরা । গুলি তাঁর হাতে, বুকে এবং পেটে লাগে । রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন জাকির । সেই দৃশ্য দেখে গ্রামের লোকজন দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করলে তারা বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে ।
ঘটনায় জাকিরের গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও বোমার স্প্রিন্টার ছিটকে ইউসুফ আলী মণ্ডল নামে আরও এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন । ঘটনার সময় তিনি জাকিরের সঙ্গেই ছিলেন । বোমা ও গুলিতে আহত দু'জনকেই কল্যানীর জেএনএম হাসপাতালে ভরতি করা হয় । অস্ত্রোপচার করে জাকিরের শরীর থেকে গুলি বের করা হলেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি তাঁকে । রবিবার সকালে মৃত্যু হয় ওই যুবকের ।
ঘটনার পরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শিবদাসপুরের কন্দপুকুর গ্রাম । মূল অভিযুক্ত বাচ্চার বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এলাকার ক্ষিপ্ত লোকজন । গুলিকাণ্ডের পর দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও কেন মূল অভিযুক্ত বাচ্চা-সহ খুনের অপরাধীদের গ্রেফতার করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা । নিহতের পরিবারের মধ্যেও এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল । তা আঁচ করতে পেরে খুনে অভিযুক্তদের ধরতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল । আর তাতেই মেলে সাফল্য ।