হাড়োয়া, 13 অগস্ট: পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পরও হিংসা, রক্তপাতের বিরাম নেই । এবার হাড়োয়ায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন তৃণমূলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য । নিহতের নাম শেখ সাহেব আলি । বয়স 40 । শনিবারই হাড়োয়ার খাসবালান্দা পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে অংশ নিয়েছিলেন তৃণমূলের এই জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য । ঘাসফুল শিবিরের একটি অংশের দাবি, হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ এই পঞ্চায়েত সদস্য এবার প্রধান ও উপপ্রধান পদের দাবিদার ছিলেন । কিন্তু কোনও পদই তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । তার ওপর দলের অপর গোষ্ঠীর একাংশের ক্ষোভ ছিল সাহেব আলির উপর । তার জেরেই এই খুন বলে দাবি করেছে নিহতের পরিবার ।
নিহতের মেয়ে সিমরন পারভীন বলেন,"দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে বাবার ওঠাবসা থাকায় তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠী হিংসা করত তাঁকে । বেশ কিছুদিন ধরেই সেই গোষ্ঠীর লোকজন বাবাকে খুন করার পরিকল্পনা করছিল । তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই বাবাকে খুন হতে হয়েছে । আমরা চাই অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হোক ৷"
নিহতের স্ত্রীও সেই দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন ।
পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সিরাজ গাজীর সঙ্গে দেখা করে এক সঙ্গীকে নিয়ে বাইকে করে বিথারী গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি । তখনই শেখ সাহেবের পথ আগলে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে আততায়ীরা বলে অভিযোগ । এর মধ্যে দুটি গুলি লাগে তাঁর শরীরে । একটি মাথায় । অন্যটি বুকে । রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য । গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা শেখ সাহেবকে উদ্ধার করে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি । চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
ঘটনার পরই উত্তেজিত জনতা দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া একটি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় । রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটোতেও ভাঙচুর চালিয়ে ফেলে দেওয়া হয় নয়ানজুলিতে । পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হাড়োয়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী । খুনের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নাকি পুরনো কোনও আক্রোশ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ । তবে মৃতের পরিবার দলেরই অন্য গোষ্ঠীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে । যা এই ঘটনায় অন্য মাত্রা যোগ করেছে । এলাকা শান্ত রাখতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে । সেই সঙ্গে খোঁজ চলছে অভিযুক্ত আততায়ীদেরও ।