"দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচিতে তৃণমূলের বাইক মিছিল
বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রশাসনিক জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী "দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচির ঘোষণা করেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে সারা রাজ্যে এই কর্মসূচির শুরু হল ৷ ডিসেম্বরের 1 তারিখ শুরু হয়ে কর্মসূচি চলবে জানুয়ারির 31 তারিখ পর্যন্ত ৷ প্রত্যেকের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বারাসতেও আজ এই কর্মসূচি শুরু হয় বাইক মিছিল দিয়ে ৷ কিছুদিন আগে জনসংযোগে জোর দিতে BJP যে পথে বাইক মিছিল করে আজ তৃণমূলও সেই পথেই পাল্টা বাইক মিছিল করল ৷ তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে BJP-নকল করা হয়েছে বলে দাবি পদ্ম শিবিরের ৷
বারাসত, 1 ডিসেম্বর : "দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে এবার বারাসতে BJP-র পালটা প্রচারে নামল শাসকদল। কর্মসূচির সুফল তুলে ধরতে মঙ্গলবার তাঁরা হাতিয়ার করল সেই বাইক মিছিলকে-ই। দু'দিন আগেই কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে জনসংযোগে জোর দিতে বারাসত শহরে বাইক মিছিলের আয়োজন করেছিল গেরুয়া শিবির।মিছিল শুরু হয়েছিল বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের পাশে লোকনাথ মন্দিরের সামনে থেকে।আশ্চর্যের হলেও এদিন তৃণমূলের সেই বাইক মিছিল শেষ হয় লোকনাথ মন্দিরের সামনেই। তবে,একে BJP-র পালটা কর্মসূচি বলতে নারাজ শাসকদল। গেরুয়া শিবির অবশ্য এই কর্মসূচিকে তাঁদের পালটা কর্মসূচি বলে কটাক্ষ করেছে। ফলে সরকারি কর্মসূচিতে প্রথমদিনেই তাল কাটল ৷
দুয়ারে কড়া নাড়ছে একুশের বিধানসভা ভোট। তার আগে মানুষের মন পেতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না শাসক ও বিরোধী উভয়ই। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই যেন রাজনৈতিক কর্মসূচির বহর বাড়ছে । তাই,ভোটের আগে মানুষের মন পেতে "দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেছে বেছে 12টি সরকারি প্রকল্পকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে । গ্রামাঞ্চল ও শহরের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা হবে। এমনকি,সাধারণ মানুষ এই সমস্ত প্রকল্প নিয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগের কথাও শোনাতে পারবেন। পালটা BJP-ও "আমরা সবাই সাংসদ" কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ফলে,ভোটের আগে রীতিমতো মানুষের মন পাওয়ার লড়াই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। সেই লড়াইয়ে কেউ কাউকে একচুলও জমি ছাড়তে নারাজ । আর তা গেরুয়া শিবির ও শাসকদলের কর্মসূচি,পালটা কর্মসূচিতেই স্পষ্ট। এসবের মধ্যেই এদিন সকালে "দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে বারাসতে BJP-র পালটা প্রচারে নামে তৃণমূল। আয়োজন করা হয় বাইক মিছিলের। 34 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে জাগৃতি সংঘের মাঠ থেকে তৃণমূলের উদ্যোগে শুরু হয় এই বাইক মিছিল। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর ও জেলাপরিষদের শাসকদলের নেতা নারায়ণ গোস্বামী,বারাসত পৌরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়,প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এই বাইক মিছিল নবপল্লীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শেষ হয় বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের পাশে লোকনাথ মন্দিরের সামনে।
এদিকে,তৃণমূলের এই বাইক মিছিলকে কটাক্ষ করে BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন,"দু'দিন আগেই আমরা যে রুট দিয়ে মিছিল করেছিলাম,সেখান দিয়েই মিছিল করতে হয়েছে শাসকদলকে।খুব ভালো লাগছে BJP-র কর্মসূচিকে এখন তৃণমূল নকল করছে। এজন্য তাঁদের ধন্যবাদ"। তৃণমূলের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"আমরা কয়েকটি অঞ্চল ও বুথের কর্মীদের নিয়ে বারাসতে মিছিল করেছি। অথচ,শাসকদলের এই বাইক মিছিল হয়েছে বারাসত ও মধ্যমগ্রাম বিধানসভা মিলিয়ে। মিছিলে অংশগ্রহণ করে বহিরাগতরাও। আমরা পারলে সেদিন বিভিন্ন বিধানসভা থেকে লোক এনে বারাসত শহর অচল করে দিতে পারতাম। কিন্তু মানুষের দুঃখ ও দুর্দশার কথা আমরা সবসময় চিন্তা করি। সেই কারণেই মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে"।
এই কর্মসূচিকে BJP-র পালটা কর্মসূচি বলতে নারাজ শাসকদল।এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর নারায়ণ গোস্বামী বলেন,"এটা অনেক আগেই আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি। কে কবে মিছিল করল তা দেখে আমাদের কর্মসূচি ঠিক হয় না ।" এরপরই BJP-কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "BJP দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে বারাসতকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা এসব বরদাস্ত করব না। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত এই কর্মসূচির প্রচার করতেই আমরা পথে নেমেছি । স্বাধীনতার পর কোনও সরকার এই ধরনের কর্মসূচি হাতে নেয়নি বলেও দাবি করেছেন ওই তৃণমূল নেতা।