আমডাঙা (উত্তর 24 পরগনা), 17 নভেম্বর: জয়নগরের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার উত্তর 24 পরগনার আমডাঙায় খুন তৃণমূল নেতা ৷ বোমার আঘাতে মৃত্যু হল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের। নিহতের নাম রূপচাঁদ মণ্ডল (35)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনবহুল রাস্তায় দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে প্রাণ হারালেন শাসক নেতা। তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। আততায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দেয়। মৃত্যুর খবর ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে আমডাঙা থানা।
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বোমাবাজিতে গুরুতর জখম তৃণমূল নেতা রূপচাঁদ মণ্ডলকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে। পরে, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল নেতা রূপচাঁদ মণ্ডল আমডাঙার কামদেবপুর হাটে বাজার করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর বোমা ছুড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। তখনই একটি বোমা গিয়ে লাগে ওই তৃণমূল নেতার কাঁধে। বোমার আঘাতে কাঁধের বেশ খানিকটা অংশ উড়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ার আগেই বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে আততায়ীরা বাইকে করে পালিয়ে যায়। মুহুর্মুহু বোমাবাজিতে কেঁপে উঠে এলাকা। বেশকিছু তাজা বোমাও ফেলে যাওয়া হয় এলাকায়। যেগুলো পরে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহত রূপচাঁদের মামা আব্দুল খালেক মণ্ডলের দাবি, পুরনো শত্রুতার জেরেই কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পাশাপাশি, দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি । ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, "অল্প বয়সেই রূপচাঁদ পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এভাবে প্রকাশ্যে একজন পঞ্চায়েত প্রধানের খুন হয়ে যাওয়া আমাদের পক্ষে খারাপ। খুবই মর্মান্তিক এবং দুঃখজনক ঘটনা। তদন্ত চলছে। তদন্তের আগেই খুনের কারণ বলা উচিত নয়। তাতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।"। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব মানতে চাননি সাংসদ।
অন্যদিকে, এই খুন নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, "যেখানেই খুন হচ্ছে, সেখানেই শাসকদল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতে বিরোধীদের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে। এতে প্রকৃত অপরাধীরা রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। তাই, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, সত্য ঘটনা সামনে এনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন।"