শাসন, 2 নভেম্বর: বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ-সহ শাসনের এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল (TMC Leader Arrested) এসটিএফ (STF) । ধৃত ওই তৃণমূল নেতার নাম শুকুর আলি । নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে উত্তর 24 পরগনার শাসনের খামার রামেশ্বরপুরে হানা দেয় এসটিএফের একটি দল । সঙ্গে ছিল শাসন থানার পুলিশও ।
এখানেই বাড়ি শাসনের এই দাপুটে নেতার । হানা দেওয়ার পর পুলিশ তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে ফেলে । এরপর তল্লাশি চালানো হয় তাঁর বাড়িতে । তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির বেডরুম এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে মেলে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ । উদ্ধার হয়েছে বোমা তৈরির বিস্ফোরকও (Illegal Arms Recovered) ।
বিভিন্ন জায়গা থেকে মেলে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ এসটিএফ সূত্রে খবর, চারটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, একটি লং রেঞ্জার বন্দুক এবং 54 রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে আট কেজি বোমা তৈরির বিস্ফোরকও । কী কারণে বিপুল এই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ ওই তৃণমূল নেতা বাড়িতে মজুত করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখছেন এসটিএফের আধিকারিকরা । অস্ত্র আইন, বিস্ফোরক-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, ওই তৃণমূল নেতা শাসন অঞ্চলে দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন । নতুন অঞ্চল কমিটি গঠন না হওয়ায় শাসনে সংগঠন দেখভালের জন্য পাঁচজনের একটি পর্যবেক্ষক কমিটি সম্প্রতি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে । সেই পাঁচজনের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তৃণমূল নেতা শুকুর আলি ।
তৃণমূল নেতার নাম শুকুর আলি স্থানীয় সূত্রে খবর, তিনি বারাসত 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শম্ভুনাথ ঘোষ এবং হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁদের সঙ্গেই শুকুর আলির ওঠাবসা ছিল বলে অভিযোগ । শাসনে ভেড়ির দখলদারি থেকে শুরু করে মাটি ব্যবসার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন তিনি । এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে নানা দুষ্কর্মের অভিযোগও রয়েছে । কান পাতলেই সেসব কথা শোনা যায় শাসনের মাটিতে । তারই মধ্যে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, বোমা তৈরির বিস্ফোরক-সহ তৃণমূল নেতা শুকুর আলী গ্রেফতার হওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে শাসক শিবিরের (TMC Leader Arrested with illegal arms in Shasan) ।
বিশেষ করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে এই তৃণমূল নেতা গ্রেফতারে রাজনৈতিক রং লেগেছে শাসন অঞ্চলে । বিরোধীরা একযোগে এই নিয়ে শাসকদলকে আক্রমণ করতেও ছাড়ছে না । বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে শায়েস্তা করতেই বিপুল এই আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা হয়েছিল । এর সঙ্গে তৃণমূলের আরও অনেক নেতার যোগ রয়েছে । সঠিক তদন্ত হলেই তা বেরিয়ে আসবে ।"
আরও পড়ুন:তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল ঘিরে ধুন্ধুমার পানিহাটিতে
যদিও এই নিয়ে শাসক শিবিরের তরফে এখনও অবধি কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি । এদিকে ধৃত ওই তৃণমূল নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে বুধবার দুপুরে তাঁকে বারাসত আদালতে পেশ করেছে পুলিশ ।
এসটিএফের হাতে গ্রেফতার শাসনের তৃণমূল নেতা