স্বরূপনগর, 7 মে : মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরও হিংসা অব্যাহত উত্তর 24 পরগনায় । এবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির গাড়ি আটকে তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে । বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী । পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে । ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্বরূপনগরের তেপুল মির্জাপুর পঞ্চায়েতের পাড়ুই গ্রাম । একসময় পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে এক রাউন্ড গুলিও চালাতে হয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নিরাপত্তারক্ষীকে । কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শেষে পুলিশের ঘটনাস্থানে পৌঁছে আক্রান্ত ওই দু'জনকে উদ্ধার করে ৷ শাসকদলের অভিযোগ,"স্বরূপনগর বিধানসভায় পরাজয় মেনে নিতে না পেরেই সেখানে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছে বিজেপি ৷" যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাকে জনরোষের প্রতিফলন বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির ।
ভোট পরবর্তী হিংসা এবং আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে বুধবার দুপুরে স্বরূপনগরের তেপুল মির্জাপুর অঞ্চলে যান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা কর । সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা রামলাল দাস সহ আরও কয়েকজন । সেখানে বিজেপির বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পরিদর্শন করার পাশাপাশি ওই তৃণমূল নেত্রী কথা বলেন আক্রান্ত দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে । বেশ কয়েক ঘণ্টা দলীয় নেতা এবং কর্মীদের সঙ্গেই কাটান সঙ্গীতা দেবী । রাতে সেখান থেকে গাড়িতে করে দ্বীপ মেদিয়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি । গাড়িতে ছিলেন তাঁর সরকারি নিরাপত্তারক্ষী অতনু সরদারও । অভিযোগ,ফেরার সময় পাড়ুই গ্রামের কাছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির গাড়ি আটকায় বিজেপির বহিরাগত কয়েকশো দুষ্কৃতী । তারা প্রত্যেকেই সশস্ত্র অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ । এরপর,আচমকাই ওই তৃণমূল নেত্রীর গাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা । বাঁশ,লাঠি ও রড দিয়ে ভাঙচুর করা হয় গাড়ি । সেই দৃশ্য দেখে গাড়ি থেকে নেমে হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে যান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি । সেই সময় তাঁকে মারধরের পাশাপাশি প্রাণে মারার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ ৷ তখন ওই তৃণমূল নেত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী । দুষ্কৃতীদের যাবতীয় রোষ গিয়ে পড়ে তাঁর উপর । মারধরের সঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে হাত ও বুকে আঘাত করা হয় । পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় রক্তাক্ত অবস্থাতেই নিজের সার্ভিস রিভলবার বের করে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালায় সে । কিন্তু,তাতেও পরিস্থিতি আয়ত্তে না আসায় শেষে পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে আক্রান্ত ওই দু'জনকে উদ্ধার করেন । তবে,পুলিশ আসার আগেই রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চম্পট দেয় হামলাকারীরা ।
এই বিষয়ে আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রী সঙ্গীতা কর বলেন,"স্বরূপনগর বিধানসভায় বড় ব্যবধানে পরাজয় মানতে পারছে না বিজেপি । সেই কারণে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপির বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তান্ডব চালাতে শুরু করেছে আমাদের দলের কর্মী সমর্থকদের উপর । আমাদের নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় শান্তি বজায় রাখার কথা বলেছেন । তাই আমরা অশান্তি চাই না । নিরাপত্তারক্ষী যদি আমার সঙ্গে না থাকত,তাহলে বিজেপির দুষ্কৃতীরা আমাকে প্রাণেই মেরে ফেলত । পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি ।তাদের বলেছি,দুষ্কৃতীদেক যাতে দ্রুত গ্রেফতার হয় ৷"