বারাসত, 1 অক্টোবর : কোরোনা আবহে এবার কাটছাঁট বারাসতের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজোয়। বুধবার বারাসত পৌরসভা, পুলিশ, প্রশাসন ও পুজো উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোরোনা আবহে ছোট ও জাঁকজমকহীন পুজোমণ্ডপ ও আলোকসজ্জা হবে। পুজো বাজেটের বেশিরভাগ টাকাই মানব সেবায় খরচ করবেন উদ্যোক্তারা।
কালীপুজো আর বারাসত-- নাম দুটো যেন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত । কালীপুজো মানেই আলোকসজ্জা, মণ্ডপসজ্জা, প্রতিমা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বারাসতে ভিড় জমানো। বারাসতের পুজোয় সৃষ্টিশীল ও ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন, সমসাময়িক স্থাপত্যের নিপুণ প্রতিরূপের মণ্ডপসজ্জা ও মানানসই আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের মন ভরিয়ে তুলত। কিন্তু এবার কোরোনা পরিস্থিতির কারণে সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকবে বারাসত। বাড়তে থাকা কোরোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে আপাতত এমনই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন বারাসতের বড় কালীপুজো কমিটিগুলির উদ্যোক্তারা।
বাজেট কমিয়ে সাহায্যের ভাবনা বারাসতের কালীপুজো উদ্যোক্তাদের - জাঁকজমকহীন পুজোমণ্ডপ ও আলোকসজ্জার মধ্যে দিয়েই হবে এবারের বারাসতের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো
জাঁকজমকহীন পুজোমণ্ডপ ও আলোকসজ্জার মধ্যে দিয়েই হবে এবারের বারাসতের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো ৷ বাজেটের বেশিরভাগ টাকাই মানব সেবায় খরচ করবেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷
সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়ায় বারাসতে এবার বড় কোনও কালীপুজো হবে না। বিগ বাজেটের পুজো কমিটি ও ক্লাবগুলিকে নিয়ে বুধবার বারাসত পৌরসভা ও পুলিশ প্রশাসনের বৈঠক হয়। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। বারাসত পৌরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় জানান, "কোরোনা পরবর্তীকালে রাজ্যের মানুষের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনও রকম আড়ম্বর না করে সেই বাড়তি টাকা খরচ করা হবে কর্মহীন ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য। বারাসতের বড় বড় ক্লাবগুলি এই ভাবনায় সহমত হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা পৌরসভা ও প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি। পুজো কমিটিগুলি এবার বড় প্যান্ডেল না বানিয়ে সেই টাকায় গরিব মানুষদের নতুন জামা কাপড় ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করবে। এলাকা ভিত্তিক ভাবে এই কাজ করবে স্থানীয় ক্লাবগুলি।
বারাসতের কালীপুজোর প্যান্ডেল, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার অভিনবত্ব ও ঐতিহ্য সর্বজনবিদিত। শুধু এই জেলা নয়, অন্য জেলা থেকেও দর্শকরা আসেন রাত জেগে বারাসতের কালীপুজোর প্যান্ডেল দেখতে। কোরোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে এবার লাখ লাখ মানুষের ভিড় এড়াতে সমস্ত পুজো মণ্ডপগুলি ছোট করে উৎসব পালন করবে এমনটাই পরিকল্পনা হয়েছে। শুধু পুজো কমিটি নয় মানুষের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে সাধারণ দর্শনার্থীদেরও। সুষ্ঠুভাবে যাতে শারদ উৎসব ও কালীপুজো পালন করা যায় বারাসতবাসীর কাছে সেই আহ্বান জানান পৌর প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়।