পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বিবাহবার্ষিকী উদযাপন না করে সুন্দরবনের দুর্গতদের পাশে শিক্ষক দম্পতি

ফি বছর ধুমধাম করে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করেন বসিরহাটের শিক্ষক দম্পতি সুবীর ও ডেসডিমনা৷ কিন্তু, এবার বহুমানুষ কোরোনা ভাইরাস ও আমফানের জেরে অসহায় পড়েছে৷ তাই এবার আর বিবাহবার্ষিকী উদযাপন না করে সুন্দরবনের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষক দম্পতি৷

sundarbans
সুন্দরবন

By

Published : Jun 3, 2020, 1:21 AM IST

সন্দেশখালি, 3 জুন : ফি বছর জাঁকজমক করে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করেন। কিন্তু, এবার পর পর দু'টো দুর্যোগের মুখোমুখি মানুষ। একদিকে থাবা বসিয়েছে কোরোনা। দোসর আমফান ঘূর্ণিঝড়। তাই, এবার আর লোকজন খাইয়ে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন নয়৷ তার পরিবর্তে জমানো টাকায় সুন্দরবনের দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষক দম্পতি। সুবীর ও ডেসডিমনা মল্লিক।

বসিরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সেফপাড়ার বাসিন্দা সুবীর ও ডেসডিমনা। দু'জনেই শিক্ষকতা করেন গোপালপুর হাইস্কুলে। ফি বছর 7 জুন বিবাহবার্ষিকী পালন করেন। ধুমধাম করে দিনটি উদযাপন করেন। মাঝেমধ্যে বেড়াতেও গিয়েছেন। কিন্তু এবার আর তা করতে মন চায়নি। কারণ, লকডাউনে টানা আড়াই মাস রোজগারহীন অনেকে৷ রুজিরুটি নেই অনেকের৷ গোদের উপর বিষফোঁড়া ঘূর্ণিঝড় আমফান। দুই বিপদের জাঁতাকলে কার্যত থমকে গিয়েছে সুন্দরবনের জনজীবন। সন্দেশখালি, শীতুলিয়া, হিঙ্গলগঞ্জ, ঘূর্ণি মিনাখাঁ ও মল্লিকঘেরির বিস্তীর্ণ এলাকায় দুর্গত মানুষের ঘরে খাবার নেই।

এই পরিস্থিতিতে অভিজিৎ ও ডেসডিমনা সিদ্ধান্ত নেন, এবার আর বিবাহবার্ষিকী পালন নয়। অন্য উৎসব পালন করবেন। তাঁরা সুন্দরবনের দুর্গত এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। শহর থেকে চাল, ডাল, আলু, জলের বোতল, স‍্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক কিনে নিয়ে পৌঁছে গেলেন দুর্গত এলাকায়। সেখানকার গরিব মানুষের মধ্যে তা বিতরণ করলেন। পাশাপাশি যে সব স্কুলপড়ুয়ার বই নদীর জলে ভেসে গিয়েছে, তাদের হাতে খাতা, পেন ও বই তুলে দেন।

শিক্ষক দম্পতির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাঁদের সঙ্গী হয়েছেন শুভেন্দু, নিতাই, ইন্দ্রদীপ, দিলীপ ও পিন্টু নামের যুবকরাও। সুবীর ও ডেসডিমনা জানিয়েছেন, "প্রতিবছর আমরা আত্মীয়-পরিজন নিয়ে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করি। কিন্তু এবার পরিবেশ পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। কোরোনার বিপদ তাড়া করছে। টানা আড়াই মাস লকডাউন। মানুষের কাজকর্ম নেই। জীবন-জীবিকা আজ বিপন্ন। তারপর এল ঘূর্ণিঝড়। সুন্দরবনের মানুষ আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা আমাদের এই সমাজেরই মানুষ। তাদের অভুক্ত ছবি দেখে বিবাহবার্ষিকী করা যায় না। তাই, আমরা এবার অন্য রকম ভাবে দিনটি পালন করেছি।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details