পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বিহারের ভাড়াবাড়িতে জেহাদি বই, বিস্ফোরণের ছক করছিল ইজ়াজ়? - bangladesh

কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার বর্তমান আমের ইজ়াজ আহমেদ । তাকে জেরা করে বিস্ফোরক সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

বিহারের ভাড়াবাড়িতে জিহাদি বই, বিস্ফোরণের ছক করছিল ইজ়াজ?

By

Published : Aug 27, 2019, 11:38 PM IST

Updated : Aug 28, 2019, 1:50 PM IST

কলকাতা, 27 আগস্ট: বীরভূমের পাড়ুইয়ের অবিনাশপুর থেকে গয়ার বুনিয়াদপুরের পাঠানতলী । মাঝে চেন্নাই, কেরালার একাধিক শহর সহ কর্নাটকের বেঙ্গালুরু । কওসরের ডাকে গোপন সব বৈঠকে যোগ দেওয়া । জিহাদি মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার পর একের পর এক ঠিকানা বদল । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে জামাতুল মুজাহিদীন ইন্ডিয়ার বর্তমান আমের ইজ়াজ় আহমেদ । তাকে জেরা করে বিস্ফোরক সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ ।
বিহারের গয়ার পাঠানতলীতেই একটি ভাড়া বাড়িতে পরিচয় গোপন করে প্রায় দু'বছর লুকিয়ে ছিল ইজ়াজ় । সেখান থেকে অবশ্য মাঝেমধ্যে বেপাত্তা হয়ে যেত । এমনটাই জানিয়েছেন ওই বাড়ির মালিক । পাঠানতলীতে সে নিজের পরিচয় দিয়েছিল রাজমিস্ত্রি হিসেবে । মাঝে মধ্যে রাজমিস্ত্রির কাজও করত । সেই সূত্রে সে ঘরে রাখত রাজমিস্ত্রির বিভিন্ন সরঞ্জাম । সঙ্গে পাঠানতলীর প্রত্যন্ত এলাকার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রয়োজনে লোকজনের চিকিৎসা করত । সেই সূত্রে তার নাম হয়ে যায় ডক্টরবাবু । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন একাধিক নামে পরিচিত ছিল সে । কোথাও তার নাম ইজ়াজ় মৌলবী । কোথাও আবার জিতু । আর তার আসল নাম তো ছিলই । শেখ ইউসুফ । এইসব নামে সে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত । নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের কাজে তার এই সফর । কোথাও কোথাও সে ফেরিওয়ালার বেশ ধরেছিল বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা ।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার বর্তমান আমের ইজ়াজ আহমেদ

গতকাল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের পাঁচ সদস্যের টিম তার পাঠানতলীর বাড়িতে পৌঁছায় । তখন ঘরের বাইরে একটি সাইকেল ছিল । খাওয়া দাওয়া করছিল ইজ়াজ় । আর ঘরে ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু কাগজ । সেই কাগজগুলোর মধ্যেই দেখা গেছে অর্ডার করা হয়েছে বেশ কিছু জিনিস । যা দেখে অবাক তদন্তকারীরা । কোথাও অর্ডার করা হয়েছে স্ক্রু, কোথাও দড়ি, আরও অনেক কিছু । তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী আধিকারিকরা প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না সেগুলো । তার কারণ সেগুলো দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ, তাহলে কি বিস্ফোরণের ছক ছিল?

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন IED তৈরির জন্য যে কাঁচামাল লাগে সে রকমই বেশ কিছু দ্রব্যের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল । পাশাপাশি তার বাড়িতে দেখা যাচ্ছে বড় বড় সব অ্যালুমিনিয়ামের বাক্স । এছাড়াও পাওয়া গেছে বেশ কিছু জিহাদি বই । যার মধ্যে একটি বইয়ের পাতা উল্টানো ছিল । গোয়েন্দারা জেনেছেন এমনিতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে ইজ়াজ় । পরে মুর্শিদাবাদের একটি মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা । সেখানে দশম মানের পরীক্ষায় সে ফেল করে । তারপর নদিয়া জেলার কুলসুনা মাদ্রাসায় ভরতি৷ সেখান থেকে মাঝে মাঝে বাড়ি যেত ইজাজ । এরমধ্যেই বিয়ে করে সে । পরিবারের লোকজন জানত মুর্শিদাবাদ জেলার একটি মাদ্রাসায় কাজ করত সে । 2016 সাল নাগাদ শেষবার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি যায় ইজ়াজ়৷ তারপর থেকে একেবারেই বেপাত্তা ।

গোয়েন্দাদের আশা বীরভূমের পাড়ুইয়ে যে বাড়িতে সে থাকত, সেই বাড়িতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে । আগামীকাল বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা পাড়ুই রওনা দিচ্ছেন বলে সূত্রের খবর । মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে পঞ্চাশের বেশি যুবককে জিহাদের মন্ত্রে দীক্ষিত করেছে সে । দিয়েছে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ!

Last Updated : Aug 28, 2019, 1:50 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details