অশোকনগর, 20 এপ্রিল: জল যন্ত্রণার হাত থেকে অশোকনগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে এবার পদ্মা খাল সংস্কারে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার । খাল সংস্কারে ইতিমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় 44 লক্ষ টাকা (State government initiates Padma canal renovation)। অথচ সেই সংস্কারে বাঁধ সেধেছে পদ্মা খালের উপর অবৈধ দখলদার । তাই, অবৈধ দখলদারিদের হঠাতে তৎপর হয়েছেন অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ।
মঙ্গলবার বিধায়ক স্থানীয় পৌরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে পদ্মা খাল পরিদর্শনে যান । কথা বলেন অবৈধ দখলদারদের সঙ্গে । আবেদন করা হয় উন্নয়নের স্বার্থে যেন তাঁরা অবিলম্বে পদ্মা খালের উপর থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে নেন । চলতি সপ্তাহেই খাল সংস্কারের মাপজোকের কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। আর বর্ষার আগেই খাল সংস্কারের কাজ শেষ করতে চাইছে জেলা প্রশাসন । খাল সংস্কার কাজ শেষ হলে উপকৃত হবেন অশোকনগর পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ ।
ফি বছর একটু বৃষ্টি হলেই জলবন্দি হয়ে পড়ে অশোকনগর পৌরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড । বিশেষ করে পৌরসভার 2, 5, 9, 11, 12, 17 এবং 23 নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি জল-যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় বাসিন্দাদের । অভিযোগ, এর কারণ হিসেবে মূলত পদ্মা খালের উপর অবৈধ দখলদারিকেই দায়ী করেছেন পৌরবাসীরা । অবৈধ দখলদারির জন্য খালের বেশিরভাগ অংশ বুজে গিয়েছে বলে খবর প্রশাসন সূত্রে।
আরও পড়ুন :Kolkata Municipal Corporation : খাল পরিষ্কার না হলে জল-যন্ত্রণা থেকে রেহাই নেই, সাফ কথা ফিরহাদের
জানা গিয়েছে, পৌরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের পিএল ক্যাম্প মোড় থেকে গুমা পর্যন্ত পদ্মা খালের প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার ইতিমধ্যে দখল হয়ে গিয়েছে । সেখানে প্রায় 90টি দোকান গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে । দীর্ঘ 20 থেকে 30 বছর ধরে অবৈধ দখলদারিদের জন্যই জল যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই মিলছে না বলে অভিযোগ । বিধায়ক হওয়ার পরই অশোকনগরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ মেটাতে উদ্যোগী হন নারায়ণ গোস্বামী। মধ্যমগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকেও বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি । এরপরই নগরোন্নয়ন দফতর থেকে পদ্মা খাল সংস্কারের জন্য 44 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয় । কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে । কিন্তু, কাজ শুরু করা যাচ্ছে না কেবলমাত্র অবৈধ দখলদারিদের জন্য । এবার সেই অবৈধ দখলদারদের হঠাতে তৎপর হলেন বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ।
আরও পড়ুন :জল-যন্ত্রণা, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি চেয়ে যশোর রোড অবরোধ
এই বিষয়ে নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "এই অবৈধ দখলদারিরা সকলেই বসেছেন বাম আমলে । জল যন্ত্রণার বিষয়টি জানা সত্ত্বেও সিপিএম বিষয়টি নিয়ে কোনও উদ্যোগী হয়নি । আমি বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছিলাম বিষয়টির দ্রুত সমাধান করা হবে । তৃণমূল যা বলে তা করে দেখায় । সিপিএম, বিজেপি শুধু বড় বড় কথা বলে। কাজের বেলায় কিছুই করে না । খাল সংস্কার হয়ে গেলে আগামী বর্ষাতে আর জল যন্ত্রণা পোহাতে হবে না অশোকনগরের বাসিন্দাদের ৷" দখলদারিদের বিকল্প পুনর্বাসনের চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানিয়েছেন বিধায়ক।
এদিকে অবৈধ দখলদারিদের পৌরকর দেওয়া নিয়ে চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার বলেন, "সরকারি জমি কেউ অবৈধভাবে দখল করে থাকলে তাকে পৌরসভার অকুপাই ট্যাক্স দিতে হয় । এটা পৌরসভার নিয়মেই রয়েছে । তার মানে এই নয়, সে জমির মালিকানা পেয়ে গেল ৷ এদের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে । কোনও জমির মালিকানা কিংবা মিউটেশন নেই এদের ৷"