বারাসত, 18 সেপ্টেম্বর : কোরোনা মোকাবিলায় আর্থিক সংকট রয়েছে রাজ্যে । কেন্দ্রের তরফে না কি যথেষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়নি । এছাড়াও রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবিতে বারবার সরব হয়েছেন মু্খ্যমন্ত্রী । এইরকম পরিস্থিতিতে উত্তর 24 পরগনার প্রায় 50-র বেশি স্বাস্থ্য আধিকারিককে দেওয়া হচ্ছে 20 হাজার টাকার স্মার্টফোন । জরুরিকালীন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই 'সঠিক সুরক্ষা' পাননি । সেক্ষেত্রে কীভাবে স্মার্টফোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রশাসন । এ-টাকা কি সরকারি কোষাগারের ? উঠেছে এইসব প্রশ্নই । এইদিকে কাজের সুবিধার জন্যই এই পদক্ষেপ বলে দাবি জেলা প্রশাসনের ।
কোরোনা সংক্রমণ ভারতে ছড়ানোর পর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । সেই বৈঠকেও রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবিতে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব সহ কয়েকটি অ-BJP শাসিত রাজ্য । রাজ্যের কোষাগারে সংকট বলে বারবার অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এমনকী বকেয়া মেটানোর দাবিতে গতকাল সংসদে গান্ধি মূর্তির সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল সহ অন্য কয়েকটি দল ।
এইদিকে রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণেও যে রাশ টানা গিয়েছে তা নয় । প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে । তবে সুস্থতার হারও বাড়ছে । রাজ্যে সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষস্থানে কলকাতা । তারপরেই উত্তর 24 পরগনা । স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 43 হাজার ছাড়িয়েছে । মৃতের সংখ্যা প্রায় 1 হাজার । এই রকম পরিস্থিতিতে জেলায় আরও ভালো পরিষেবার জন্য অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল । কিন্তু তা না করে এই ঘোর সংকটের সময় কেন স্বাস্থ্য আধিকারিকদের 20 হাজারের মোবাইল দেওয়া হচ্ছে । প্রশ্ন তুলেছেন জেলার বিরোধী দলের সদস্যরা । অনেকেই এইটিকে মোবাইল বিলির 'মোচ্ছব' বলেও কটাক্ষ করছেন ।
আসলে কী হচ্ছে উত্তর 24 পরগনায় ?
অভিযোগ, রাজ্যের তরফে এখনও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে PPE কিট দেওয়া হয়নি । স্বাস্থ্যকর্মীরাও পাননি । জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু স্বাস্থ্যকর্মী উপযুক্ত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করে চলেছেন ।
জেলার সমস্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকের জন্য বরাদ্দ হয়েছে 20 হাজার টাকার মোবাইল ফোন । উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরেরই একটি বিবৃতিতে তার উল্লেখ রয়েছে । সেই বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পাবেন 25 হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন । তাঁর দপ্তরের তিন ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, অ্যাকাউন্ট অফিসার-সহ বাকি 12 জন পাবেন 20 হাজার টাকার ফোন । এখানেই শেষ না । বারাসত সদর, বনগাঁ, বসিরহাট, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের সুপার 20 হাজারের ফোন পাবেন । এবং জেলার সাতটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, 27 টি গ্রামীণ ও ব্লক হাসপাতালের সুপাররাও প্রত্যেকে এই মোবাইল ফোন পাবেন । পাশাপাশি কয়েকজন মেডিকেল আধিকারিকও পেতে পারেন । সব মিলিয়ে 50-র বেশি লোক এই মোবাইল পাবেন ।