বসিরহাট, 15 মে : পাঁচদিন কেটে যাওয়ার পরও সন্ধান পাওয়া গেল না হারিয়ে যাওয়া বিএসএফের ইনসাস রাইফেল ও কার্তুজ (BSF Rifle Snatching at Ghojadanga)। খোয়া যাওয়া রাইফেল এবং কার্তুজের হদিশ পেতে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত এলাকায় প্রত্যেক বাড়ি হন্যে হয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন বিএসএফের 153 নম্বর ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানরা ।
সঙ্গে চলছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নাকা চেকিং-ও। সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তার কড়াকড়ির পরও অথচ ছিনতাই হওয়া ইনসাস রাইফেল কিংবা 20 রাউন্ড কার্তুজের কোনও কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বিএসএফের তরফে। কিন্তু ছিনতাই হওয়া রাইফেল ও কার্তুজ গেল কোথায়? সীমান্ত পেরিয়ে তা বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে চলে যায়নি তো? এই প্রশ্নই এখন বেশি করে ভাবাচ্ছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে। আর যদি সেরকমটা হয়ে থাকে তা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও উদ্বেগ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের।
এমনিতেই চোরাচালান, অনুপ্রবেশের বাড়বাড়ন্তে জেরবার ভারত-বাংলাদেশের ঘোজাডাঙা সীমান্ত এলাকা। তা ঠেকাতে বিএসএফ তৎপর হলেও মাঝে-মধ্যেই চোরাপথে এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের। তার ওপর খোদ মহিলা বিএসএফ জওয়ানের কাছ থেকে ইনসাস রাইফেল ছিনিয়ে দুষ্কৃতীদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যদিও, সীমান্তের নিরাপত্তায় কোনও খামতি নেই বলে দাবি বিএসএফ কর্তৃপক্ষের।
খোয়া যাওয়া রাইফেল এবং কার্তুজের হদিশ পেতে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তে চলছে তল্লাশি আরও পড়ুন :সীমান্তে মহিলা বিএসএফ জওয়ানকে মারধর করে রাইফেল ছিনতাই করে পালাল দুষ্কৃতীরা
তবে, কতটা বেপরোয়া হলে দুষ্কৃতীরা মহিলা বিএসএফ জওয়ানকে মারধর করে সঙ্গে থাকা রাইফেল এবং কার্তুজ ছিনিয়ে নেওয়ার সাহস পায়, সেটাই বারবার ঘুরে-ফিরে আসছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মনে । তাঁদের একটাই কথা,"দুষ্কৃতীদের ধরার নামে যেন নিরীহ গ্রামবাসীদের অযথা হয়রানি না হতে হয়। দোষীদের খুঁজে শাস্তি দেওয়া হোক, সেটাই এখন বাসিন্দারা চান। এই কাজে বিএসএফকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত গ্রামবাসীরা"। অন্যদিকে, বিএসএফের পাশাপাশি বসিরহাট জেলা পুলিশও খোয়া যাওয়া রাইফেল এবং কার্তুজ উদ্ধারে কোনও খামতি রাখছে না। তাঁরাও আলাদাভাবে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশির কাজ শুরু করেছেন। সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছেন গোটা ঘটনার।
আরও পড়ুন :বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনায় ইডি'র জালে মূল অভিযুক্ত-সহ 6
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোরে অর্থাৎ 10 মে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তে পাহারা দেওয়ার সময় এক মহিলা বিএসএফ জওয়ানের ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এরপর, ওই মহিলা জওয়ানকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ইনসাস রাইফেল এবং 20 রাউন্ড কার্তুজ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। ঘটনার পরই বসিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষের তরফে। তদন্তে নেমে সেই সময় কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বিএসএফ কর্মীরা। পরে, ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় তাদের। কিন্তু, ধৃতদের জেরা করে খোয়া যাওয়া রাইফেল কিংবা কার্তুজের হদিশ পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে ছিনতাই হয়ে যাওয়া রাইফেল ও কার্তুজ পাচার হয়ে যায়নি তো? উত্তর খুঁজছে বিএসএফ এবং পুলিশ।