স্বরূপনগরে মৃত আশাকর্মী রেবা বিশ্বাসের বাড়িতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর স্বরূপনগর, 18 ডিসেম্বর: পশ্চিমবঙ্গে সিএএ কার্যকরী হওয়া নিয়ে ফের আশার বাণী শোনালেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি ও কেন্দ্রীয় জাহাজ রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ৷ তিনি বলেন, "সিএএ নিয়ে পজিটিভ পদক্ষেপ হবে । জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ এই নিয়ে কার্যকরী ভূমিকা নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার । আশা করা যায়, নতুন বছরেই সিএএ কার্যকরী হবে ।" শনিবার বিকেলে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরে নিহত আশাকর্মী রেবা বিশ্বাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । তাঁর সঙ্গে ছিলেন গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর-সহ অন্যরা ৷ এদিন নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি (Central Minister Shantanu Thakur visits deceased ASHA worker house in Swarupnagar Uttar 24 Parganas) ৷
এদিন সিএএ (Citizenship (Amendment) Act, 2019) নিয়ে শান্তনু ঠাকুরের দাবি, "জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে সিএএ নিয়ে একটা কিছু হতে পারে ৷ সেটা কী, তা বিশদে আমাকে জানানো হয়নি ৷ তবে, রুল ফ্রেমের সম্ভাবনা রয়েছে ৷ গুজরাতে যেমন সিএএ লাগু হয়েছে ৷ তেমনই অন্য রাজ্যেও রুল ফ্রেম করে সিএএ লাগু করার কাজ চলছে ৷"
রাজ্যে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেন, "রাজ্য সরকারের দুর্নীতি একেবারে সামনে চলে এসেছে ৷ এভাবে বেশিদিন কোনও সরকার চলতে পারে না । মানুষ সবকিছু দেখছে ৷ এর জবাব রাজ্যের মানুষ ভোট বাক্সে দেবে বলে আমি মনে করি।"
আরও পড়ুন: বৈঠকে রাজ্যের দাবি জানালেন মমতা, আতিথেয়তার প্রশংসায় শাহ
আশাকর্মী রেবা বিশ্বাসের মৃত্যু নিয়েও কার্যত প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ বিজেপি সাংসদের কথায়, "পরিবার তো স্পষ্ট অভিযোগ করছে, উপর মহল থেকে চাপ দেওয়া হয়েছে তাঁকে (আশাকর্মী রেবা বিশ্বাস) । তিনি সরকারি প্রকল্পের অনিয়ম রুখতে চেয়েছিলেন ৷ নীতি ও চাপের কাছে হার মেনে শেষে ওই আশাকর্মী-কে আত্মহত্যা করতে হয়েছে ৷ এটাই তো এখন রাজ্যের সব জায়গায় চলছে ৷ রাজ্যে এখন সিন্ডিকেট রাজ ৷ তাতে মদত জোগাচ্ছে শাসকদল ৷ অযোগ্যরা যোগ্য জায়গায় বসে রয়েছে ৷" প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (Pradhan Mantri Awas Yojana) দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকার আলাদাভাবে সমীক্ষা করছে বলেও দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷
নদী সংস্কার এবং সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত স্তরে কোনও কাজ হয়নি ৷ আমি নদী সার্ভেতে এসেছি ৷ রাজ্য সরকারের সেচ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নদীগুলিতে ড্রেজিং করানো দরকার ৷ মনে হয়, বিগত 50 বছরে রাজ্য সরকার এ বিষয়টা দেখেনি ৷" তাঁর অভিযোগ, কোনও কাজ হয়নি বাংলায় ৷ কলকাতায় কিছু কাজ হয়েছে ৷ তবে যাঁরা কলকাতায় থাকেন, তাঁরা সে বিষয়ে বলতে পারবেন ৷ তবে কলকাতার বাইরে কোথাও কোনও বৃহত্তর কাজ হয়নি ৷
শনিবার নবান্নে অমিত শাহের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হয় ৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পাঁচ রাজ্যের প্রতিনিধি, উচ্চাধিকারিকরা ছিলেন ৷ কিন্তু সেখানে দেখা যায়নি শান্তনু ঠাকুরকে ৷ এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি যেতে পারিনি ৷ আমায় জানানো হয়নি, এটা কে বলেছে ? আমার অন্য কাজ ছিল ৷ আমি দিল্লিতে ছিলাম ৷ আমার আসার আগে বৈঠক হয়ে গিয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: মমতা-অমিত একান্ত সাক্ষাতের কারণেই কি ব্রাত্য রইলেন হেমন্ত-তেজস্বী !