সন্দেশখালি, 10 জানুয়ারি: সন্দেশখালি কাণ্ডে 'ফেরার' তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের আলিশান হোটেলই এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির নজরে ৷ সূত্রের খবর, ঘটনার দিন এই হোটেলেই দীর্ঘক্ষণ ছিলেন সন্দেশখালির 'বাদশা' তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান । হামলা, ইডি আধিকারিকের রক্তাক্ত হওয়া, গাড়ি ভাঙচুর, সব খবরই নাকি তাঁর কাছে সময়মতো পৌঁছে গিয়েছিল পেটোয়া লোকজনের মারফত ! এতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ব্লু-প্রিন্ট কি তাহলে রচিত হয়েছিল 'নিখোঁজ' শেখ শাহজাহানের হোটেলে বসেই ? নাকি সেখান থেকেই হামলার যাবতীয় নির্দেশ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল তাঁর অনুগামীদের কাছে ? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরই এখন খোঁজার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ।
হামলার ঘটনার কোনও না কোনও সূত্র লুকিয়ে রয়েছে শেখ শাহজাহানের হোটেলেই । এমনটাই মনে করছেন ইডির আধিকারিকরা । সেই কারণে তাঁদের নজরে তৃণমূল নেতার এই হোটেলও রয়েছে বলে খবর সূত্রের ৷ গত শুক্রবার সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় তৃণমূলের বাহুবলী নেতা শেখ শাহজাহানের খোঁজে তাঁর আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় ইডি আধিকারিকদের । শুরু হয় ইটবৃষ্টি ৷ ইটের আঘাতে মাথা ফাটে এক ইডি আধিকারিকের । তারপর থেকেই রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে চলে এসেছে সুন্দরবন ঘেঁষা অজপাড়ার এই গ্রাম । শুধু কি তাই ! এ নিয়ে চড়ছে রাজনীতির পারদও ।
কিন্তু, এতকিছুর পরও সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে ৷ হামলার ঘটনার মাস্টারমাইন্ড দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান কোথায় ? ঘটনার পর পাঁচদিন কেটে গেলেও এখনও এর কোনও উত্তর মেলেনি । কারণ, তিনি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে । শাসকদলের এই 'বাহুবলী' নেতার কোনও হদিশ এখনও পর্যন্ত না মেলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ যেখানে ইডি ইমেল মারফত জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে, স্বয়ং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন, সেখানে কীভাবে শাহজাহান দিনের পর দিন আত্মগোপন করে থাকেন সেটাও ভাবাচ্ছে আইনজ্ঞদের একাংশকে ৷ তাহলে কি কারও মদতেই তৃণমূলের দাপুটে নেতা সেফ কাস্টডিতে রয়েছেন ? নাকি শুধুমাত্র শাসক নেতা হওয়াতেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এত গড়িমসি পুলিশের ? এমনও সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ।