মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন বারাসতের বাসিন্দা বারাসত, 3 জুন: শুক্রবার ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েও মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন বারাসতের বাসিন্দা রূপম বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অক্ষয় অবস্থায় ফিরেছেন পরিবারের বাকি সদস্যরাও ৷ শনিবার ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে জীবনের হামহিম করা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন রূপম ৷
অভিশপ্ত চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন রূপম বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই ট্রেনের বি-3 এসি কোচের যাত্রী ছিলেন পেশায় পর্যটন ব্যবসায়ী রূপম। সঙ্গে ছিলেন শঙ্কর গুহ নামে তাঁর এক বিজনেস পার্টনার-ও। চেন্নাইয়ে ট্যুরের জন্যই একদিন আগে সেখানে যাচ্ছিলেন তিনি। শনিবার ট্যুরের বাকি 30 জন সদস্যের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস-সহ তিনটি ট্রেন। যার বীভৎসতা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। প্রাণহানি, আর্তনাদ, হাহাকার সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের ছোটবাজার এলাকার বাসিন্দা রূপম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ট্যুর এণ্ড ট্রাভেলসের ব্যবসা রয়েছে। সেই কারণে মাঝেমধ্যেই তাঁকে পর্যটক নিয়ে যেতে হয় বাইরে। সেরকমই একটি ট্যুরে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি।সংস্থার মোট চারজন কর্মী-সহ বিজনেস পার্টনার ছিলেন রূপমের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: এখনও ট্রেনে উঠতে ভয় হয়, দুর্ঘটনার দেড় বছর পর আতঙ্কের কাহিনি যাত্রীর মুখে
রূপম বলেন, "দীর্ঘ 30 বছর ধরে ট্রেনে যাতায়াত করেছি। এমন অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি। ভয়াবহ সেই দৃশ্য যেন কাউকে না দেখতে হয়। এখনও ঘোরের মধ্যে রয়েছি। প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে একসময় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দাঁড়িয়ে গেল। তখনও বুঝতে পারেনি সামনে বীভৎস দৃশ্য অপেক্ষা করে রয়েছে। কোনওক্রমে ট্রেন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। তারপর চোখের সামনে যা দেখেছি তা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। রেললাইনের ট্র্যাক থেকে ট্রেনের কোনও বগি বেরিয়ে 50 ফুট দূরে চলে গিয়েছে। আবার কোনও বগি একটার পর একটার ঘাড়ে উঠে দলা পাকিয়ে গিয়েছে। এমন বীভৎস দৃশ্য দেখে তখন রীতিমতো কাঁপতে শুরু করেছি। অন্যকে কি উপকার করব আমি?" শেষে রূপম জানিয়েছেন, ভগবানের অসীম কৃপা ছাড়া এমন মিরাক্কেল হতে পারে না।