বারাসত, 20 ফেব্রুয়ারি : ভাষা দিবসের নির্মীয়মাণ স্মারকের পাশে এখনও জ্বলজ্বল করছে তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার । তিনি চেয়েছিলেন,ভাষা দিবসের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়ের কাছে পৌঁছে দিতে। সেই জন্য নিজের ওয়ার্ডেই উদ্যোগ নিয়ে ভাষা দিবসের স্মারক গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন । ভাষা দিবসের স্মারক তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ভাষা দিবস উদযাপনের আনন্দ হারিয়ে ফেলেছে বারাসতের মানুষ । কারণ, পৌরসভার 3 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্যের অকালপ্রয়াণ । কিছুদিন আগেই এক পথ দুর্ঘটনায় এই তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয় ।
প্রদ্যুৎবাবু সচেষ্ট হয়েছিলেন ভাষা দিবসের স্মারক গড়ে তুলতে । সেই মতো বারাসতের ন'পাড়ায় 34 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে স্মারক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় । কাজের প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধানও করতেন তিনি । কিন্তু, আচমকাই দুর্ঘটনায় তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুতে যেন সব ওলোটপালোট হয়ে গেছে । যার হাত ধরে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে ওই স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল, তিনিই আজ সকলের থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন । ফলে,স্মারকের কাজের গতিও অনেকটা শ্লথ হয়ে গেছে । তবে, তাঁর শুভাকাঙ্খীরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার কোনও কসুর করছেন না । আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভাষা দিবসের স্মারকের মাধ্যমে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে । এরই সঙ্গে বাংলা ভাষার প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে ভাষা দিবসের স্মারককেই এখন তুলে ধরতে চাইছেন প্রদ্যুতের শুভাকাঙ্খীরা ।
এবিষয়ে বাবু দাস নামে এক এলাকাবাসী বলেন, ''দাদার হাত ধরেই 21 ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের দিনে ভাষা দিবসের স্মারক উন্মোচন হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু, তাঁর অকালপ্রয়াণে সেই কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গেল । এককথায় ভাষা দিবসের ভাষায় আমরা হারিয়ে ফেলেছি । তবে, দাদার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য । তাঁরই মতো কাউন্সিলরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন সঞ্জয় দে-ও । তাঁর কথায়, প্রদ্যুত ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে ওয়ার্ডের সকলের মন থেকেই ভাষা হারিয়ে গেছে । বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে ও ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে তাঁর প্রচেষ্টাকে সার্থক করায় এখন লক্ষ্য আমাদের । স্মারক গড়ার কাজ কিছুটা থমকে গেলেও আমরা সেই কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি । যাতে দাদা, যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন পূরণ করা যায় ।''