বিধাননগর, 10 অগাস্ট : সুজিত, তাপসদের পেছনে ফেলে বিধাননগর পৌরনিগমের মেয়র হলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী । মেয়র হিসেবে আজ দুপুরে শপথ নিলেন তিনি । তাঁর বিপরীতে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় একতরফাই মেয়র নির্বাচিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের এই ছায়াসঙ্গী । শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আজ উপস্থিত ছিলেন পুর্ণেন্দু বসু, শশী পাঁজা, ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দোলা সেন-সহ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা । উপস্থিত ছিলেন সল্টলেকের বিশিষ্টরা । শপথ শেষে কৃষ্ণা বললেন, ''জনগণের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত । উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতি আসবে না ।''
বিধাননগরের মেয়র পদে সব্যসাচী দত্তর ইস্তফার পর থেকেই একাধিক নাম উঠে এসেছে নতুন মেয়র হিসেবে । এক সময় সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন সুজিত বসু । তৃণমূলের প্রথমসারির অনেকেই তাঁকে মেয়র পদে বসানোয় সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন । তবে, হাবেভাবে কিছুটা হলেও কৃষ্ণা চক্রবর্তী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সব্যসাচী পরবর্তী বিধাননগর পৌরনিগমের হাল ধরতে চলেছেন তিনিই । জানিয়েছিলেন, দল তাঁকে চাইলে তিনি মেয়র হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত । তবে, দলের অন্দরেই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল একাধিক । শুধু সুজিত নন । মেয়র পদে নাম উঠে এসেছিল তাপস চট্টোপাধ্যায়েরও । তবে তিনি মেয়র পদে আসীন হলে অনেকে আস্থা ভোটে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল ।
সব্যসাচী দত্তর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পর থেকেই বিধাননগর পৌরনিগমে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয় । সব্যসাচী পদত্যাগ করার পর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় । জানা গেছে, সুজিত বসুকে মেয়র করতে চেয়ে দলের একাংশ উদ্যোগী হলেও সেই সময় তিনি মেয়র হতে না চাওয়ায় অনেকেই তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নাম প্রস্তাব করেছিলেন । তবে, তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বদলে দলের বেশিরভাগ অংশেরই পছন্দ ছিল কৃষ্ণাকে । তার একটা কারণ, তিনি আগেও বিধাননগর পৌরনিগমের মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন । সূত্রের খবর, কাউন্সিলরদের বড় একটা অংশ জানিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গী কৃষ্ণা চক্রবর্তী মেয়র হলে তাদের কোনও আপত্তি নেই । সেই মতোই কয়েক দফা বৈঠকের পর 31 জুলাই নবান্ন সূত্রে জানা যায় কৃষ্ণা চক্রবর্তীই হচ্ছেন বিধাননগরের পরবর্তী মেয়র ।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন কৃষ্ণা । বলেন, "জনগণের হয়ে কাজ করব । কাজের ক্ষেত্রে রাজনীতি কোনও বাধা হবে না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ করছেন সল্টলেকে সেই ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করব । জনগণের জন্য সব সময় আমার দরজা খোলা রয়েছে । বিধাননগরের মানুষ এবং আমরা সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করব । পরিষেবার পাশাপাশি কোথাও কোনও বেআইনি কাজ যদি হয় সেক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে সেটা দেখব । ব্যবস্থা নেব । আমাদের নেত্রী কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেন না । আমরাও লক্ষ্য রাখব কোথাও বেআইনি কাজ যাতে না হয় । বিধাননগর পরিকল্পিত শহর । এখানে সবকিছু ঠিকঠাক আছে । রাজারহাটে কিছু রাস্তা কাঁচা রয়েছে । অনেক কাজ বাকি আছে । সেগুলি করতে হবে ।" ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, "তিন মাসের মধ্যে বিধাননগর এবং রাজারহাটকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । প্রত্যেক দলেই কিছু ভালো-খারাপ মানুষ থাকে । আমাদের সজাগ থাকতে হবে ।"