সন্দেশখালি, 11 জানুয়ারি: সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে সাতদিন পর সন্দেশখালি কাণ্ডে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল ন্যাজাট থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম মেহবুর মোল্লা ও সুকমল সর্দার। সূত্রের খবর, ধৃত দু'জনেই 'ফেরার' তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ঘটনার দিন ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা এবং মারধরের ঘটনায় এই দুইজন সরাসরি যুক্ত বলে দাবি পুলিশের। হামলার ভিড়িয়ো ফুটেজে দেখে ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতিও প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেই ভিডিয়ো ফুটেজ দেখেই শনাক্ত করা হয় ওই দু'জনকে। এরপরই বৃহস্পতিবার সরবেড়িয়ার একটি ভেড়ি এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও করে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই দুই অভিযুক্তকে। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানা গিয়েছে ন্যাজাট থানা সূত্রে। তবে, সাতদিন পরেও ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার মাস্টারমাইন্ড, সন্দেশখালির 'বাহুবলী' তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের হদিস মেলেনি।
'নিখোঁজ' শাহজাহান কোথায় আত্মগোপন করে রয়েছেন! তাঁর পিছনে কারও মদত রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। যদিও পুলিশের 'সেফ কাস্টডিতে'ই তৃণমূলের এই 'বাহুবলী' নেতা রয়েছেন বলে বারবার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা ৷ এমনকী, সবকিছু জেনেও রাজ্য পুলিশ শাহজাহানকে ধরতে গড়িমসি করছে বলে দাবি তাদের। কিন্তু প্রশ্ন এখন একটাই, কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় কেন পুলিশ সাতদিন পরেও শেখ শাহজাহানের হদিস পেল না! হামলার ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে কেনই বা বাকিদের এখনও অবধি শনাক্ত করা সম্ভব হল না ? নাকি শুধুমাত্র সমালোচনার মুখে পড়ে মুখ বাঁচাতে দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল পুলিশ ? ঘটনার পর এমনই সব প্রশ্ন উঁকি মারতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। যদিও কোনও প্রশ্নের উত্তরই মেলেনি এখনও পর্যন্ত। কারণ, ঘটনার পর থেকে এনিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে বসিরহাট জেলার পুলিশ কর্তারা।
এদিকে, গত শুক্রবার ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে ইমেল মারফত অভিযোগ দায়ের করা হয় বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপারের কাছে। সেই মতো পুলিশ শেখ শাহজাহান এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করে ন্যাজাট থানায়। এছাড়া আরও দুটি এফআইআর হয়েছে সেখানে। তার মধ্যে একটিতে রয়েছে বেপরোয়া অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার বিষয়টি।
সেখানে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের ওপর হামলার মতো অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। অন্যটিতে আক্রান্ত ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই শ্লীলতাহানি, চুরির মতো জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের করেছে ন্যাজাট থানার পুলিশ। যদিও, সেই মামলায় ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, আগামী 31 মার্চ পর্যন্ত ইডির বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করতে পারবে না পুলিশ।