ভাটপাড়া, 24 নভেম্বর: ভাটপাড়ায় তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় অবশেষে সাফল্য পেল পুলিশ। ঘটনার তিনদিনের মাথায় খুনে অভিযুক্ত দুই সাহায্যকারীকে পাকড়াও করল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ তদন্তকারী দল। ধৃতদের নাম অঙ্কিত কুমার সিং ওরফে রিঙ্কু ও রইস আলি।তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব খুনে সুপারি কিলারদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার জন্যই এদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে, খুনে সরাসরি যুক্ত চার আততায়ীর এখনও পর্যন্ত হদিশ পাওয়া যায়নি। খোঁজ মেলেনি খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রেরও। যদিও পলাতক চার দুষ্কৃতীর দ্রুত নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে বলেই আশাবাদী ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এই বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "খুনের ঘটনার পর এলাকার যাবতীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে কয়েকজন সন্দেহভাজন আততায়ীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। বেশকিছু তথ্যও মিলেছে পলাতক দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে। তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু সামনে আনছি না। খুনিদের গ্রেফতার করার পরই সামগ্রিক বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হবে ৷" খুনের আগে আততায়ীদের আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে পথ চিনিয়ে তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদবকে পরিকল্পনা মাফিক খুন। সবেতেই রিঙ্কু এবং রইসের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার। এই বিষয়ে তিনি বলেন, "ধৃতরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এবিষয়ে তথ্যও হাতে এসেছে। এরপরই ভাটপাড়া ও জগদ্দল থেকে এই দু'জনকে পাকড়াও করা হয়েছে। আততায়ীদের সহযোগিতা করা ছাড়া ধৃতরা আর কোনও সাহায্য করেছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷"
এদিকে, স্থানীয়দের সাহায্য নিয়েই যে বহিরাগত আততায়ীরা এই খুনের নিখুঁত টার্গেট করেছিল তা মানছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া। তাঁর কথায়, "খুনের ঠিক আগে চার আততায়ীকে মেঘনা মিলের একটি পরিত্যক্ত আবাসনে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় রিঙ্কু এবং রইস। এই দু'জনের সবুজ সংকেত মেলার পরই খুন করা হয় ওই তৃণমূল কর্মীকে। বহিরাগত চার দুষ্কৃতী হলেও ঘটনাস্থলে বাইক নিয়ে যায় তিন দুষ্কৃতী। তারাই খুন করে ভিকি যাদবকে ৷" খুনের কারণ অবশ্য এদিন খোলসা করে কিছু বলেননি ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার। এদিকে, ধৃত এই দু'জনকে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আগামিকাল শনিবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাটপাড়ার জগদ্দলের পুরাণী তালাব এলাকায় বাড়ির সামনেই দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান ভিকি যাদব। তাঁকে লক্ষ্য করে বাইকে আসা তিন দুষ্কৃতী অন্তত 11 রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এর মধ্যে নয় রাউন্ড গুলি গিয়ে লাগে তৃণমূল কর্মীর শরীরে। সঙ্কটজনক অবস্থায় ভিকি যাদবকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। যদিও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। খুনের পর 48 ঘন্টা কেটে গেলেও আততায়ীরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। অবশেষে খুনে দুই সাহায্যকারীকে পাকড়াও করে মুখ রক্ষা করল ব্যারাকপুর কমিশনারেট।