পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

পাত্রের আসার অপেক্ষায় কনেপক্ষ, নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ

দেগঙ্গার উত্তর কাউকে পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মণ্ডল । তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের জোয়ারিয়ায় শেখ বাকিবুল্লার সঙ্গে । দুই পরিবারের মধ্যস্ততাতেই বিয়ের দিন ঠিক হয় । মেয়ে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া, নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও পরিবারের লোকে তার বিয়ে ঠিক করে ।

নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ
নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ

By

Published : Nov 5, 2020, 7:25 PM IST

দেগঙ্গা, 5 নভেম্বর : বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সম্পূর্ণ । চলে এসেছেন অতিথিরাও । কনের সাজে বিয়ের জন্য তৈরি পাত্রী । শুধু বর আসার অপেক্ষা । ঠিক তখনই বিয়েবাড়িতে হাজির পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা । পাত্রী নাবালিকা ৷ তাই তার বিয়ে এখন দেওয়া যাবে না ৷ বিয়ে রুখলেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা । ঘটনাটি দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা 1 নম্বর পঞ্চায়েতের উত্তর কাউকে পাড়ার । শুধু বিয়ে রুখলেন না, নাবালিকার পরিবারকে রীতিমতো মুচলেকা লিখিয়ে নেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা ৷ বোঝালেন 18 বছর বয়স না হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না। সরকারের কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী প্রকল্প সম্পর্কে নাবালিকার পরিবারকে বোঝান প্রশাসনের আধিকারিকরা ।

জানা গেছে, দেগঙ্গার উত্তর কাউকে পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মণ্ডল । তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের জোয়ারিয়ায় শেখ বাকিবুল্লার সঙ্গে । দুই পরিবারের মধ্যস্ততাতেই বিয়ের দিন ঠিক হয় । মেয়ে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া, নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও পরিবারের লোকে তার বিয়ে ঠিক করে । তৈরি করা হয়েছিল প্যান্ডেল । সকাল সকাল বিয়ে বাড়িতে চলে এসেছিলেন আত্মীয়-স্বজনরাও । রান্নাবান্না থেকে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন প্রায় শেষ । সকলেই মশগুল বিয়ের আনন্দে । কিন্তু তাল কাটল পুলিশ আসায় ।

পরিবারের কাছ থেকে পাত্রীর জন্মের নথি দেখতে চায় পুলিশ । দেখা যায় তখনও পাত্রীর 18 বছর বয়স হয়নি । এরপরই কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার কুফল নিয়ে পরিবারের লোকজনদের সচেতন করা হয় পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা । নাবালিকার বিয়ে সামাজিক অপরাধ । এক্ষেত্রে সাজার বিধান রয়েছে বলেও পাত্রীর বাবা ও মাকে বলেন প্রশাসনের আধিকারিকরা । এছাড়া, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধার কথাও তুলে ধরা হয় । শেষে, নিজেদের ভুল বুঝতে পারে নাবালিকার পরিবার । দেগঙ্গা থানার পুলিশ, চাইল্ড লাইন ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনেই মুচলেকা দিয়ে কনের বাবা-মা জানান, এরকম ভুল আর হবে না । 18 বছর না হলে তাঁরা মেয়ের বিয়ে দেবেন না। পরিবারের আশ্বাস পাওয়ার পরই কনের বাড়ি ছাড়েন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা ।

দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিক সিতাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, "নাবালিকার বিয়ে সামাজিক অপরাধ । চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি । এরপরই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সেখানে হানা দিই । সঠিক সময়ে যাওয়ার ফলেই নাবালিকার বিয়ে রোখা গিয়েছে । ওর পরিবার মুচলেকা দিয়ে আশ্বাস দিয়েছে ১৮ বছর না হওয়া অবধি তার বিয়ে দেবে না ৷’’ এই বিষয়ে চাইল্ড লাইনের এক কর্তা বলেন,"এই ধরনের সামাজিক অপরাধ ঠেকাতে গেলে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে । তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার মতো ঘৃণ্য অপরাধ রোখা কার্যত অসম্ভব । অনেকে বুঝেও এই ধরনের অপরাধে সামিল হচ্ছেন । আশা করব, তাঁরা এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকবেন ।’’

ABOUT THE AUTHOR

...view details