বসিরহাট, 8 জুন : এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা ! একে তো যশ এবং পূর্ণিমার ভরা কোটালের দগদগে ঘা এখনও শুকোয়নি । তারই মধ্যে দোসর অমাবস্যার ভরা কোটালের (Sundarban Kotal) ভ্রুকুটি । আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে সুন্দরবনের বানভাসিদের ৷ কী করবেন ? কোথায় যাবেন ? তা ভেবেই কুল-কিনারা পাচ্ছেন না দুর্গতরা । অমাবস্যার ভরা কোটালে ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ দিয়ে ফের জল ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে এলাকায় । ফলে আবারও প্লাবনের আশঙ্কার প্রহর গুনছেন যশ বিধ্বস্ত সুন্দরবনবাসী ৷ ইতিমধ্যে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন । কিন্তু তাতেও যেন আতঙ্ক কাটছে না দুর্গত মানুষের ।
গত 26 মে যশ (Super Cyclone Yaas) এবং পূর্ণিমার ভরা কোটালের প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে বিপর্যস্ত হয় সুন্দরবন লাগোয়া বসিরহাটের অন্তত ছ'টি ব্লক । সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে সন্দেশখালি 1 ও 2, হিঙ্গলগঞ্জ এবং মিনাখাঁ ব্লকে । জলের স্রোতে একের পর এক কাঁচা নদীবাঁধে ফাটল দেখা দেয় ৷ বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢোকে লোকালয়ে । জলের তোড়ে ভেসে যায় গ্রামের পর গ্রাম । সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে বানভাসি মানুষকে । বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমি, মাছের ভেড়ি, ঘরবাড়ি এখনও জলের তলায় । সপ্তাহ খানেক পরও সুন্দরবনের অনেক এলাকা থেকে জল ঠিক মতো নামেনি । কোথাও হাঁটু সমান জল, আবার কোথাও কোমর অবধি জল । ফলে জলবন্দি অবস্থাতেই দিন কাটছে অনেকের । গৃহহীন হয়ে আবার অনেকের ঠাঁই হয়েছে উচুঁ জায়গায় রাস্তার ধারে কিংবা আশ্রয় শিবিরে । কেউ কেউ রাস্তার ধারে ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে দিনযাপন করছেন । জলবন্দি এলাকার কোথাও যেতে হলে এখনও বানভাসি মানুষের ভরসা কলাগাছের ভেলা ।
এরকম দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে যখন দিন গুজরান করতে হচ্ছে বানভাসি মানুষকে, তখনই তাঁদের চিন্তা বাড়িয়েছে অমাবস্যার ভরা কোটালের ভ্রুকুটি । ইতিমধ্যে আগামী 11 ও 26 জুন পরপর দু'টি ভরা কোটালের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে প্রশাসন । আর তার জেরে তটস্থ সুন্দরবনের দুর্গত মানুষ । ফের প্লাবনের আশঙ্কায় প্রখর গুনছেন তাঁরা । আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে তাঁদের ৷ প্রশাসন পাশে থাকার ভরসা দিলেও শঙ্কা কিছুতেই কাটছে না সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দাদের ।