পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

রোগী ভরতি নিয়ে হয়রানির শিকার তৃণমূল বিধায়ক, অভিযোগ অস্বীকার বেসরকারি হাসপাতালের - Barasat corona

কোরোনা পরিস্থিতিতে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তারজন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বারবার মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানাচ্ছেন । কিন্তু তারপরও চিকিৎসা পেতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে ।

TMC LEADER
TMC LEADER

By

Published : Sep 21, 2020, 11:27 PM IST

বারাসত, 21 সেপ্টেম্বর : কোরোনা পরিস্থিতিতে রোগী ভর্তি করাতে এসে এবার হয়রানির শিকার হলেন খোদ শাসকদলের বিধায়ক । প্রায় আড়াই ঘণ্টা টালবাহানার পরও রোগী ভরতি করাতে ব্যর্থ হন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমান । ঘটনায় ক্ষুদ্ধ তৃণমূল বিধায়ক ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন । বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি । বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নজরেও অনা হবে বলে বলেন তিনি ।যদিও রোগী ভরতি নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ মানতে চায়নি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

জানা গিয়েছে, উত্তর 24 পরগনার আমডাঙার বাসিন্দা নাজমা খাতুন বিবি । বয়স প্রায় 70-এর কাছাকাছি । সম্পর্কে বিধায়ক রফিকার রহমানের পিসি হন ওই বৃদ্ধা । বেশকিছু দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি । আজ সকালে শরীর আরও খারাপ হওয়ায় পিসিকে সঙ্গে নিয়ে বারাসত রথতলার কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে আসেন তৃণমূল বিধায়ক । সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন আত্মীয় । অভিযোগ, এরপরই রোগী ভরতি করাতে গিয়ে শুরু হয় হয়রানি । চলে টালবাহানাও । অভিযোগ, সরকারি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখার পরই রোগী ভরতি করাতে বেঁকে বসেন ওই বেসরকারি হাসপাতাল । সকাল এগারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা রোগী ভরতির নামে হয়রানি চলে বলে অভিযোগ উঠেছে । তবে, এতকিছুর পরও বেসরকারি ওই হাসপাতালে রোগী ভরতি করাতে ব্যর্থ হন তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমান ।শেষে মারুতি গাড়িতে করেই ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে ভরতির উদ্দেশে রওনা হন তিনি । তিনি বলেন,"স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে হয়রানি আগে শুনেছি। তবে,এবার প্রত্যক্ষ করলাম নিজের পরিবারের ক্ষেত্রে । স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ডে চিকিৎসা হলে সরকারের সুনাম বাড়বে । এটা একশ্রেণির বেসরকারি হাসপাতাল চায়না । তাঁরা সরকারের বদনাম করতে চক্রান্ত করছে ।" বিধায়কের আরও অভিযোগ, "পিসিকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয় টালবাহানা । প্রথমে বলে কোরোনা পরীক্ষা করাতে হবে । এরপর আমি যখন কোরোনা পরীক্ষার করার কথা বলি, তখন স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ড দেখেই বেঁকে বসে রোগীকে ভরতি করাতে । একবার বলছে ভরতি নিচ্ছি ।এরপর কাগজপত্র তৈরি হওয়ার পর আবারও বলছে যেহেতু কোরোনা পরীক্ষা হয়নি সেহেতু আপনার রোগী ভরতি নেওয়া যাবে না ।"

কোরোনা পরিস্থিতিতে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বারবার মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানাচ্ছেন । কিন্তু তারপরও চিকিৎসা পেতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে । কখনও সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার অভিযোগ । আবার কখনও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও রোগীর চিকিৎসা না মেলার অভিযোগ উঠেছে । আজ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনও কানে তুলছে না । কারণ একটাই যেনতেন প্রকারে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা যাতে গরিব মানুষ না পায় ।আমি বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে তুলে ধরব । অভিযোগ করব জেলাশাসকের কাছে ।"

যদিও বিধায়কের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।এই বিষয়ে হাসপাতালের ইস্টার্ন জোনালের হেড বিদ্যা সাগরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি বিধায়কের আত্মীয় ওই রোগীর কোরোনা উপসর্গ ছিল । তাই আগে কোরোনা পরীক্ষার কথা বলা হয় । কিন্তু তিনি আগে ভরতি নেওয়ার কথা বলেন । যেহেতু এই হাসপাতাল কোরোনা হাসপাতাল নয়, সেই কারণে অন্য রোগীদের আমরা বিপদের মুখে ফেলতে পারি না । সেই কারণে কোরোনা পরীক্ষা করার পরই রোগী ভরতি করার কথা বলা হয় । তাই বিধায়কের অভিযোগ সঠিক নয় । কেউ যদি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখিয়ে চিকিৎসার খরচ পাওয়ার উদ্দেশ্যে রোগী ভরতি করান তাহলে সেটা অন্য ব্যাপার । "

ABOUT THE AUTHOR

...view details