বারাসত, 7 জুলাই: উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের ক্ষমতা নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । মূলত উন্নয়নের ওপর ভর করেই বিরোধীদের কুপোকাত করতে চাইছে তারা । তবে, তার মধ্যেও রয়েছে নির্দল কাঁটা । এই জেলার বেশকিছু জায়গায় তৃণমূলের হয়ে টিকিট না পেয়ে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধেই লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন গোঁজ প্রার্থীরা । যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসকের ।
আর তৃণমূলের এই গোষ্ঠী কোন্দলের ফায়দা নিতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না বিরোধীরা । সেই সঙ্গে জেলাপরিষদের ফাঁক ফোকর তুলে ধরে শাসকদলের দিকে পালটা চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । এবছর ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে উত্তর 24 পরগনা জেলায় আসন বেড়ে হয়েছে 5 হাজার 194টি । এর মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা 4 হাজার 535 । পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসন যথাক্রমে 593 ও 66 । গ্রাম সংসদের মোট আসনের মধ্যে ইতিমধ্যে 866টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে শাসকদল । পঞ্চায়েত সমিতিতে 104টি এবং জেলা পরিষদের তিনটি আসনে ভোটেই আগেই খাতা খুলে ফেলেছে তৃণমূল ।
অর্থাৎ, এবারও মোট 973টি আসনে বিনা লড়াইয়ে আগেই জয়লাভ করেছে শাসকদল । বাকি 4 হাজার 221টি আসনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিতে কোনও খামতি রাখছেন না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । তাই প্রচারে মূলত শাসকের দুর্নীতি, কাটমানি ইস্যুকে হাতিয়ার করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস প্রত্যেক দলের প্রার্থীরা । তৃণমূলকে একচুলও জায়গা ছাড়তে নারাজ তারা । যদিও বিরোধীদের লড়াইয়ের মধ্যে রাখছেন না জেলা পরিষদের বিদায়ী পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, "বিগত পাঁচ বছরে জেলা পরিষদ প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেছে । রাস্তাঘাট,পানীয় জল,গরিব মানুষকে ঘর দেওয়া থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত উন্নয়নের কাজই হয়ে গিয়েছে । তবে, গ্রামীণ এলাকায় এখনও মূল রাস্তার ওপর পর্যাপ্ত আলোর প্রয়োজন রয়েছে । সেগুলো আমরা জেলা পরিষদে ফের ক্ষমতায় এসে হাত দেব । এটুকু বলতে পারি, 35 শতাংশ কাজ আমরা শেষ করে ফেলেছি । হয়তো দেখা যাবে 5 শতাংশের মতো কাজ বাকি রয়েছে । মানুষ জানে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারে রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের বিকাশ ঘটাতে । তাই, বিরোধীরা লড়াই করলেও হালে পানি পাবে না "।
এবারও জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতা এবং বিধায়ক । তাঁর কথায়,"বিজেপি ভাবছে রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ করলেই নিজেদের উত্থান হবে । ওরা এটা চিন্তা করছে না যে কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকা আটকে দেওয়া মানে বিজেপির প্রান্তিক মানুষেরও ক্ষতি । তাঁরাও প্রকল্পের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেন্দ্র যদি রাজ্যের বকেয়া টাকা মেটাত, তাহলে আরও উন্নয়নের কাজ করা যেত। তা সত্ত্বেও রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী ধারাবাহিকভাবে উন্নয়নের কাজ করে চলেছেন ৷ "