বসিরহাট, 16 জুলাই : সাপেকাটা রোগীকে ওঝার বাড়িতে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলল ঝাড়ফুঁক। অবশেষে মৃত্যু হল রোগীর। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটের মাটিয়া-কোড়াপাড়া এলাকায়। মৃতের নাম সফিকুল দফাদার (41) । তাঁর স্ত্রী খাদিজা বিবিকেও সাপে কামড়েছে। তাঁকে অবশ্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোড়াপাড়ার বাসিন্দা সফিকুল দফাদার ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বিবি বুধবার রাতে মশারির মধ্যে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত দুটো নাগাদ কিছু একটা শব্দ শুনে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভেঙে লাইট জ্বালিয়ে দেখতে পান, মশারির মধ্যে একটি বিষধর কালাচ সাপ ঢুকে পড়েছে। শফিকুল তাঁর ছেলেকে ডাকেন। ছেলে বাইরে বেরিয়ে লাঠি নিয়ে এসে সাপটিকে মেরে ফেলেন। কিছুক্ষণ পরে সফিকুলের স্ত্রী খাদিজা অসুস্থ হয়ে পড়েন। দেখা যায়, তাঁর ঘাড়ে সাপে কামড়ানোর ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। গভীর রাতে সফিকুল স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় এক ওঝার বাড়িতে যান। সেখান থেকে ঝাড়ফুঁক করানোর পরে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি আসেন। বাড়িতে ফিরে আসার পর সফিকুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। খাদিজাও আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের দু'জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় সেই ওঝার বাড়িতে। বুধবার দিনভর চলে ওঝার কেরামতি। অবশেষে ঝাড়ফুঁকে মৃত্যু হয় সফিকুলের। তখন সবার চৈতন্য হয়। তড়িঘড়ি খাদিজা বিবিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
ওঝার কেরামতি, সাপেকাটা রোগীর মৃত্যু হল ঝাড়ফুকে
বিষধর কালাচ সাপ কামড়ে ছিল সফিকুল দফাদার ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বিবিকে ৷ হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ ওঝার বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলল ঝাড়ফুঁক। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুজনকেই পাঠানো হয় হাসপাতালে ৷অবশেষে ঝাড়ফুঁকে মৃত্যু হয় সফিকুলের। ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটের মাটিয়া-কোড়াপাড়া এলাকায়।
সাপেকাটা রোগীর মৃত্যু হল ঝাড়ফুকে
মৃত সফিকুলের ছেলে মুন্না বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করতাম, ওঝা সাপেকাটা রোগী বাঁচাতে পারে। কিন্তু আমার বাবাকে বাঁচাতে পারেনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো আমার বাবা বেঁচে যেত।' পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিষধর সাপেকাটা রোগীকে ওঝা কখনও বাঁচাতে পারে না। সাপেকাটা রোগীর চিকিৎসা হাসপাতালেই সম্ভব। ওঝার বাড়িতে ঝাড়ফুঁক, মৃত্যু হল সাপেকাটা রোগীর ।