প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বেনিয়ম ! দত্তপুকুর, 12 ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনিয়ম রুখতে এবার আসরে নামলেন খোদ জেলাশাসক ৷ প্রকল্পের সমীক্ষার তদারকিতে গিয়ে উপভোক্তাদের একেবারে 'দুয়ারে' পৌঁছে গেলেন তিনি ৷ খোঁজখবর নিলেন তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিরা সরকারি এই প্রকল্পের সুবিধা আদৌও পেয়েছেন কিনা ৷ সোমবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুর 1 নম্বর পঞ্চায়েতের কাইপুত্র পাড়ার বাসিন্দারা (North 24 Parganas DM is in Field to Prevent Irregularities in Pradhan Mantri Awas Yojana) ৷
আর এই তদারকিতে গিয়ে কোথাও কোথাও বেনিয়ম চোখে পড়ল উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক শরৎ কুমার দ্বিবেদীর ৷ পাকা বাড়ি থাকার পরেও, আবাস যোজনার তালিকায় এক উপভোক্তার নাম থাকায়, সেটি সরজমিনে খতিয়ে দেখে জেলাশাসক বাতিল করে দেন বলে জানা গিয়েছে ৷ সমীক্ষাতে এরকম আরও কয়েকজন উপভোক্তার নাম আগামী দিনে বাতিল হতে পারে বলে খবর প্রশাসন সূত্রে ৷
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম রুখতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজ ৷ সরকারের নির্দেশ মতো জেলায় জেলায় পাঠানো হচ্ছে বিশেষ টিম ৷ আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছেছে কিনা ৷ কোথায়ও কোনও অনিয়ম হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা মূলত কাজ বিশেষ এই দলের ৷ পরবর্তীতে তা রিপোর্ট আকারে তুলে দেওয়ার কথা ওই দলের ৷ অভিযোগ, তা করতে গিয়ে কোথাও কোথাও আবার বিক্ষোভ, হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে সরকারি আধিকারিকদের ৷
সেই কথা মাথায় রেখে এদিন পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি সারপ্রাইজ ভিজিট করেন উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক শরৎ কুমার দ্বিবেদী ৷ সঙ্গে ছিলেন, বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা সাউ, বিডিও সৌগত পাত্র-সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা ৷ এদিন প্রথমে জেলাশাসক যান দত্তপুকুরের ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েত অফিসে ৷ সেখানে বারাসত 1-এর বিডিও দফতরে গিয়ে সমীক্ষার তালিকা খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক ৷ সেখান থেকে চলে যান দত্তপুকুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার কাইপুত্র পাড়ায় ৷
আরও পড়ুন:আদৌ বাড়ি পাওয়ার যোগ্য তো ? আবাস যোজনার উপভোক্তাদের দুয়ারে মহকুমাশাসক
সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ভোম্বল কাইপুত্র নামে এক উপভোক্তার দুয়ারে পৌঁছে যান জেলাশাসক ৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পাওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয় ওই উপভোক্তাকে ৷ একইভাবে জেলাশাসক আশ্বস্ত করেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা বাদল কাইপুত্র নামে আরেক উপভোক্তাকেও ৷ তবে, পাশের ধোপা পাড়ায় প্রকল্পের সমীক্ষার তদারকিতে গিয়ে বেনিয়ম চোখে পড়ে জেলাশাসকের ৷ তিনি দেখেন, পাকা বাড়ি থাকার পরেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা পেতে, তালিকায় নাম তুলেছেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী ইন্দ্রজিৎ দাস ৷ যদিও, সেই সময় ইন্দ্রজিতের পরিবারের কেউই বাড়িতে হাজির ছিলেন না ৷ এরপরেই তাঁর নাম প্রকল্পের তালিকা থেকে বিডিও-কে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি ৷
যদিও, ইন্দ্রজিতের বৌদি অনামিকা দাসের দাবি, "বাড়ির দেওয়াল পাকা হলেও ওপরের ছাউনি প্লাস্টিকের ৷ সেই কারণে পাকা ঘর খুবই দরকার ৷ এখন পাবে কিনা সেটা জানিনা ৷’’ এদিকে, উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন বিডিও সৌগত পাত্র ৷ তিনি বলেন, "ব্লকে প্রায় 12 হাজার 405 জনের নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায় ৷ সেক্ষেত্রে পাকা বাড়ি রয়েছে এমন 12 শতাংশের মতো উপভোক্তার নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সরকারি প্রকল্পে ৷ সেগুলো এখন সমীক্ষা করে ঝাড়াই বাছাইয়ের কাজ চলছে ৷’’