দেগঙ্গা, 18 নভেম্বর: একই গাছে পাশাপাশি ঝুলছে দুটি দেহ (Hanging Body Recovered)। নিচে পড়ে রয়েছে বিষের শিশি । আবার দু'জনের পায়েই বাঁধা লোহার শিকল । এমনই রহস্যজনক মৃত্যুর (Mysterious Death) ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গায় । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন মণিরুল ইসলাম (22) এবং সুস্মিতা কাহার (17)। দু'জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । যা দুই পরিবার ও গ্রামের বেশ কিছু মাতব্বর মেনে নিতে পারেননি বলে অভিযোগ । তাহলে কি সম্পর্ক পরিণতি না-পাওয়ার আশঙ্কাতেই ওই যুগল আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ? নাকি তাঁদের খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ? প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ । গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের চক চাঁদপুর গ্রামে বাড়ি মণিরুলের । পাশের গ্রামেই থাকতেন প্রেমিক সুস্মিতা । বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল যুগলের মধ্যে । যদিও ভিন্ন সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে দুই পরিবারের কেউই সেই সম্পর্ক মেনে নেননি । উল্টে সম্পর্ক জানাজানি হতেই বিবাদ শুরু হয় দুই পরিবারে । গ্রামের মাতব্বররাও এই সম্পর্কের বিষয়টি ভালভাবে নেননি । একসময় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রেমিক যুগলকে চাপ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ । তা সত্বেও এক অপরের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করেননি তাঁরা ।
এ সবের মধ্যেই কয়েকদিন আগে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর গ্রামে যান প্রেমিক মণিরুল । সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক ভাইও । অভিযোগ, সেই সময় প্রেমিক যুগলকে একসঙ্গে দেখতে পেয়ে কিছু অপরিচিত লোকজন তাঁদের মারধর করে । সেই সময় কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন প্রেমিক যুগল এবং মণিরুলের ভাই ।
আরও পড়ুন:Tathagata Roy : চালচলনে বদল না হলে বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী, ফের তথাগতর নিশানায় বঙ্গ-বিজেপি
এরপরই বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান মণিরুল । বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হলেও কোনও হদিশ মেলেনি তাঁর । বেশ কয়েকঘণ্টা পর স্থানীয় একটি আমবাগানে লিচু গাছের ডালে মণিরুল ও তাঁর প্রেমিকা সুস্মিতার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায় । প্রেমিক যুগলের দু'জনের পা লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা ছিল । মাটিতে পড়ে ছিল বিষের শিশিও । আর এতেই রহস্য দানা বেঁধেছে । প্রশ্ন উঠেছে,যদি সত্যিই তাঁরা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে থাকেন, তাহলে পা কেন শিকল দিয়ে বাঁধা ছিল ! কেনই বা দেহের নিচে বিষের শিশি পড়েছিল ! এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ ।