বারাসত, 2 নভেম্বর: করোনার দোসর এবার ডেঙ্গি । দুইয়ের প্রকোপে বিধ্বস্ত উত্তর 24 পরগনা । সেখানে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই 500 ছাড়িয়ে গিয়েছে । তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের । তবে বিষয়টি উদ্বেগজনক হলেও, এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে দাবি তাদের । শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ অনেকটাই কম বলে জানানো হয়েছে । তবে আতঙ্ক কাটছে না সাধারণ মানুষের ।
পুজোর পর রাজ্যের সর্বত্র করোনা সংক্রমণ যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে এমনিতেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে । তার মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপে দুশ্চিন্তা বাড়ছে । এর মধ্যে উত্তর 24 পরগনার বেশ কিছু এলাকা চিন্তা বাড়াচ্ছে, কারণ বরাবরই ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকা বলে পরিচিত সেগুলি । কয়েক বছর আগে দেগঙ্গায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় 200 মানুষ প্রাণ হারান । তাতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে ।
আরও পড়ুন:Mamata Banerjee : চার আসনের উপনির্বাচনে মানুষের জয়, টুইট মমতার
তার পর থেকে ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৎপরতা বেড়েছে অনেকটাই । পঞ্চায়েত এবং পৌরনিগমের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগেভাগে সচেতনতা তৈরি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়তে শুরু করেন প্রশাসনিক কর্তারা । তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে । গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণেই ছিল । কিন্তু করোনার মধ্যেই এবার ফের ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে । তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবছর এই সময় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 114 । এ বার সংখ্যাটা 97 । জেলার পৌরসভা এলাকায় গতবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 719 । সেখানে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা 413 । গ্রামীণ এলাকার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজারহাট ব্লকে । সেখানে এখনও অবধি ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা 46 । এর পরই রয়েছে হাবড়ার এক নম্বর ব্লক এবং দেগঙ্গা ব্লক । শহর এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে বিধাননগর পৌরনিগম এলাকা । সেখানে ইতিমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বরানগর পৌরনিগম এলাকা । সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা 46 । কামারহাটি পৌরনিগম এলাকায় 28 এবং দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকায় 20 জন এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর । অন্যান্য পৌরসভা এলাকায় সংখ্যাটা তুলনামূলক কম বলেই জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন:Firecracker : বাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টে মামলা
তবে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রশাসন যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তী । তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম এবং শহরে এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে প্রশাসনের তরফে । মশা নিধনে এক দিকে ছোট ছোট ডোবাগুলিতে গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে । টায়ার টিউবে জল জমে থাকলে পোড়া মোবিল এবং কেরোসিন ঢেলে মশার লার্ভা মারার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘মশার লার্ভা না জন্মালে ডেঙ্গির প্রকোপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে । এনিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন আশা এবং প্রাণীসম্পদ কর্মীরা । ডেঙ্গি নির্মূল করাই আমাদের মূল লক্ষ্য ৷ আশা করি তাতে সফল হতে পারব আমরা ৷’’