বাগদা, 19 অগস্ট: খেলেছে ন্যাশনাল-সহ একাধিক ফুটবল লিগ । তবে এখনও পেট চালাতে বিভিন্ন কাজ করতে হচ্ছে নাবালক দুই ফুটবল খেলোয়াড় ভাইকে ৷ তবুও ছেঁড়া কাথায় শুয়েই তারা স্বপ্ন দেখে সুনীল ছেত্রীর মতো দেশের জার্সি গায়ে জাতীয় স্তরে খেলার । কিন্তু বাস্তবটা বড্ড কঠিন ৷ মাঠের থেকেও জীবনের লড়াইটা অনেক বেশি বড় তাদের ৷ তবে হাতে হাত রেখে প্রতিদিন সেই কঠিন লড়াই লড়ে যাচ্ছে 17 ও 15 বছর বয়সি দুই ভাই । তারা উত্তর 24 পরগনার বাগদা ব্লকের মালপোতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা । এলাকায় ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে পরিচিতি তাদের । তবে কখনও রাজমিস্ত্রির লেবারের কাজ করে আবার কখনও বা মাছ ধরার জাল টেন পেট চালাতে হয় দুই ভাইকে । তাদের নিজেদের স্বল্প আয়েই চলে পড়াশোনা ও খেলা । শত বাধা কাটিয়ে দেশের হয়ে ফুটবল খেলাই লক্ষ্য মেসি ও রোলান্ড ভক্তদের ।
2023 সালে ইন্দো নেপাল ইনভাইটেশন নটারন্যাসনাল চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (আন্ডার 18) খেলেছে 17 বছরের খোলায়াড়টি ৷ এই বছরই সে নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট লিগেও খেলেছে । 2006 সালে অল ইন্ডিয়া যুব লিগ-সহ একাধিক লিগ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ঝুলিতে । পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তার যখন পাঁচ বছর বয়স তখন বাবা তাদের ছেড়ে চলে যান । কিছুদিনের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন মা । সেই থেকে দুই ভাই মামার বাড়িতে দিদা সন্ধ্যা রায়ের কাছে বড় হয়েছেন । তিনি লোকের বাড়িতে কাজ করে দুই ভাইকে বড় করেছেন । বর্তমানে সন্ধ্যার বয়স সত্তরের দোরগোড়ায় । ঠিকমতো তিনি কাজ করতে পারেন না । পারেন না দুই নাতিকে সঠিক সময় রান্না করে দিতে ।
আরও পড়ুন:জাগলিংয়ে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডের 3টি খেতাব জয় জাগলার দীপক রায়ের
তিনি জানান, ওদের মা বাবা চলে যাওয়ার পর অনেক কষ্টে মানুষ হয়েছে । দুই ভাই ফুটবল খেলতে ভালোবাসে কিন্তু টাকার অভাবে ভালো খেলার সরঞ্জাম কিনতে পারে না । তাঁকে মা বলে ডাকে দুইভাই । ওদের যত আবদার তাঁর কাছে ৷ কিন্তু লোকের বাড়ি কাজ করে যে টুকু পারেন তিনি করেন । দুই নাতির লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সন্ধ্যা রায় ।
তিনি বলেন, "কোন দিন পান্তা ভাত খেয়ে কোন দিন আবার না খেয়ে 40 মিনিট সাইকেল চালিয়ে ট্রেন ধরে কলকাতার মাঠে প্র্যাকটিস করতে যায় বড় নাতি ।"