কলকাতা, 26 অগাস্ট : বনগাঁ পৌরসভায় ফের আস্থা ভোটের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আজ এই নির্দেশ দেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর নির্দেশ, অর্ডার পাওয়ার 12 দিনের মধ্যে নতুন করে আস্থা ভোট করাতে হবে ৷ আস্থা ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশকে সবরকম ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ যতদিন পর্যন্ত এই ভোট প্রক্রিয়া শেষ না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত SDO বা সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক আধিকারিককে পৌরসভার দায়িত্ব সামলাতে হবে ৷ হাইকোর্টের এই রায়কে নিজেদের জয় হিসেবে দেখছেন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা কাউন্সিলররা ৷ পিটিশনারদের পক্ষের আইনজীবী দেবযানি দাশগুপ্ত বলেন, "আদালতের এই নির্দেশ ঐতিহাসিক ৷"
মাসদুয়েক আগে বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে অনাস্থার আবেদন জানিয়েছিলেন 14 জন কাউন্সিলর । মহকুমা শাসকের কাছে তাঁরা আবেদন করেছিলেন । স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে পদক্ষেপ না করায় তৈরি হয়েছিল অচলাবস্থা । শেষে ওই 14 জন কাউন্সিলরদের মধ্যে 12 জন দিল্লিতে গিয়ে BJP-তে যোগদান করেন । তারপরই অনাস্থা ভোট চেয়ে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করা হয় । অবশ্য অনাস্থা ভোটের আগেই একজন কাউন্সিলর তৃণমূলে ফিরে আসেন ।
দেবযানি দাশগুপ্ত (পিটিশনারদের পক্ষের আইনজীবী) আরও পড়ুন : বনগাঁ পৌরসভায় নতুন মোড়, তৃণমূলে ফিরলেন 4 কাউন্সিলর
বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন 3 জন কাউন্সিলর । হাইকোর্ট 11 জুলাই নির্দেশ দেয় 72 ঘণ্টার মধ্যে আস্থা ভোট প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে । তবে শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় 16 জুলাই ভোট হবে । 16 জুলাই ব্যাপক হট্টগোলের মাঝে BJP ও তৃণমূল দুই পক্ষই দাবি করে যে আস্থা ভোটে তারা জিতেছে । এরপর আস্থা ভোটের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা শুরু হয় । এই মামলা চলাকালীন ফের শাসকদলে ফিরে যান BJP-তে যোগ দেওয়া বনগাঁ পৌরসভার চার সদস্য । ফলে 22 সদস্যের বনগাঁ পৌরসভায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা হয় 13 ৷ অঙ্কের হিসেবে রাজ্যের শাসকদলই বনগাঁ পৌরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন দখলে রেখেছে ৷
আরও পড়ুন :বনগাঁ পৌরসভার অনাস্থা মামলার শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত
16 জুলাই ঝামেলার পর দু'পক্ষ আলাদা আলাদা করে দুটি রেজুলেশন করে । ভোটদান নিয়ম মেনে হয়নি বলে 17 জুলাই হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারী দিপ্তেন্দু বিকাশ বৈরাগীসহ অন্য কাউন্সিলররা । 17 জুলাই থেকে শুরু হয় মামলার শুনানি ৷ শুনানিতে রাজ্য সরকার ও পুলিশকে একাধিকবার ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ 31 জুলাই মামলার শুনানি শেষ হয় । শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি ।
16 জুলাইয়ের ঝামেলার বিষয়টি মাথায় রেখে আজ নির্দেশ দেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর নির্দেশ, অর্ডার পাওয়ার 12 দিনের মধ্যে জেলা শাসকের দপ্তরে আস্থা ভোট করাতে হবে ৷ SP-র তত্ত্বাবধানে ভোট হবে ৷ যতদিন পর্যন্ত না আস্থাভোট পর্ব মিটছে ততদিন SDO বা পৌরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার প্রতিদিনের কাজকর্ম সামলাবেন ।