আগরপাড়া, 6 অগাস্ট : জন্ম হয়েছিল পুরুষ রূপে কিন্তু নারীসুলভ আচরণ ছিল সুশান্তর ৷ আবার নারীরূপে জন্ম হলেও পুরুষ সুলভ আচরণ ছিল দীপান্বিতার ৷ তাই সমাজে তাঁরা ছিল ব্রাত্য ৷ গতকাল একে অপরকে বিয়ে করলেন তাঁরা ৷
শুভদৃষ্টির সময় তিস্তা ও দীপন আগরপাড়া মহাজাতি নগরের সুশান্ত দাস ৷ পুরুষ রূপে তাঁর জন্ম হয় ৷ কিন্তু মন থেকে নিজেকে নারী হিসেবে দেখতেই পছন্দ করতেন তিনি ৷ তার প্রভাব দেখা যেত সুশান্তর আচরণে ৷ তাই 2004 সালে নিজের নারী হওয়ার ইচ্ছেপূরণ করতে অস্ত্রোপচার করে লিঙ্গ রূপান্তর করেন সুশান্ত ৷ নাম হয় তিস্তা ৷ অন্যদিকে গড়িয়ার দীপান্বিতা চক্রবর্তী ৷ জন্মসূত্রে নারী ৷ কিন্তু আচরণ ছিল পুরুষ সুলভ ৷ সুশান্তর মতো দীপান্বিতাও লিঙ্গ রূপান্তর করেন ৷ নাম হয় দীপন ৷
বিয়ের মণ্ডপে তিস্তা ও দীপন কর্মসূত্রে আলাপ হয় দীপন ও তিস্তার ৷ বন্ধুত্ব হয় দু'জনের ৷ সেই বন্ধুত্ব পরিণত হয় প্রেমে ৷ লিঙ্গ রূপান্তর থেকে নিজের জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা সবক্ষেত্রেই সমাজে ব্রাত্য হয়েছেন তিস্তা ও দীপন ৷ সহ্য করতে হয়েছে অনেক লাঞ্চনা-গঞ্জনা ৷ কিন্তু হার মানেননি তাঁরা ৷ সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দু'জনে ৷ গতকাল তাঁদের সম্পর্ক পরিণতি পায় ৷ বিয়ে করেন তাঁরা ৷
বিয়ের পর তিস্তা বলেন, "আমি খুব খুশি ৷ একসময় যাঁরা আমাদের সমালোচনা করতেন আজ তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিতে পেরেছি ৷ মানুষ যদি মানুষকে সম্মান দিতে না পারে তাহলে কোনওদিন সুশীল সমাজ তৈরি হতে পারে না ৷" তিস্তার সঙ্গে সহমত পোষণ করে দীপন বলেন, "এই বিয়ের মাধ্যমে সমাজকে বলতে চাই, আমাদের মধ্যে প্রেম আসে ৷ আমরাও ভালোবাসতে পারি ৷ আমাদের মধ্যে সমাজ আছে ৷"
প্রসঙ্গত, রাজ্যে এই প্রথম দুই রূপান্তরকামীর বিয়ে হল ৷