বারাসত, 6 জুন : লকডাউন কাটিয়ে মিষ্টির দোকান খুলে সবে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ভেবেছিলেন ধীরে ধীরে ব্যবসা করে লকডাউনের আর্থিক ক্ষতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করবেন । কিন্তু, তার আগেই সবকিছু শেষ! আজ সকালে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল মিষ্টির দোকানই! উত্তর 24 পরগনার বারাসতের ঘটনা। রোজগারের একমাত্র সম্বলটুকু হারিয়ে কার্যত এখন দিশেহারা অবস্থা মিষ্টি ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিৎ দাসের। মিষ্টির দোকানের যাবতীয় জিনিস পুড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে ওই ব্যবসায়ীর।
বারাসত দক্ষিণ পাড়া মোড়ের যশোর রোডের পাশেই রাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। ১৫৬ বছরের পুরানো দোকান। আজ সকালে আচমকাই আগুন লেগে যায় মিষ্টির দোকানটিতে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে । দোকানের আশপাশে বহু বসতবাড়ি থাকায় আতঙ্ক ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্য। অনেকেই ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
খবর পেয়েই দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থানে এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। প্রায় ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে, পুড়ে গেছে পুরো দোকানটি।
মিষ্টির দোকানের মালিক ইন্দ্রজিৎ দাস বলেন, "দীর্ঘ লকডাউনের জেরে এমনিতেই ব্যবসার যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। তারপরও মনের জোরে দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম ধীরে ধীরে ব্যবসা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। কিন্তু, আগুনে সব কিছু শেষ হয়ে গেল। দোকানের কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। এখন কী করব,আর কীভাবেই সংসার চালাব তা বুঝে উঠতে পারছি না। যদি কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়,তাহলে হয়তো আবার নতুনভাবে শুরু করতে পারব।"
খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছান বারাসত পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাড মিনিস্ট্রেশনের সদস্য ও বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "ওই মিষ্টির দোকানটি অনেক পুরানো। অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি এখানে এসে মিষ্টি খেয়ে গিয়েছেন। আমরাও মিষ্টি খেয়েছি ওই দোকানে গিয়ে। ফলে, সেখানে আগুন লাগার ঘটনা দুঃখজনক। কীভাবে আগুন লাগল সেটা দমকল খতিয়ে দেখছে। ক্ষতিগ্রস্ত মিষ্টির দোকানের মালিকের পাশে দাঁড়ানো যায় কি না, সেটা আমরা দেখছি।"
অন্যদিকে, দমকল সূত্রে জানা গেছে সম্ভবত শর্ট সার্কিটের জেরে ওই মিষ্টির দোকানে আগুন লেগে থাকতে পারে। তবে অন্য কোনও কারণ আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মিষ্টির দোকানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখছে দমকল কর্তৃপক্ষ।