মাদ্রাসায় রাজনৈতিক কর্মসূচির জেরে পিছিয়ে গেল পরীক্ষা বারাসত, 13 ডিসেম্বর: পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়ে মাদ্রাসায় তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচি। আর সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক । উত্তর 24 পরগনার আমিনপুর সিনিয়র মাদ্রাসার চিত্রটা এই রকমই । প্রশ্ন উঠেছে,পড়ুয়াদের পরীক্ষা বন্ধ করে কীভাবে সেখানে শাসকদলের রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে ৷ পরীক্ষার দিনেই কেন সেই কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হল ? ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এ নিয়ে সুর চড়িয়েছে বাম ও গেরুয়া শিবির । যদিও পরীক্ষা বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা অস্বীকার করেছে শাসক শিবির ।
বুধবার আমিনপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় ছিল সমস্ত ক্লাসের পরীক্ষা । অথচ মঙ্গলবার স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এদিনের পরীক্ষা নেওয়া হবে আগামী শনিবার অর্থাৎ 16 ডিসেম্বর । সেই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে এটাও জানানো হয়, বুধবার এই মাদ্রাসা ছুটি থাকবে । পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার নির্দিষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি ৷ অথচ স্কুল খোলা রেখে অডিটোরিয়ামে চলছে তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পর্যালোচনা কর্মশালা। সেই কর্মসূচিতে বিভিন্ন মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধিকারিক ও সংগঠনের রাজ্য সভাপতি, জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ উপস্থিত ছিলেন । এই কর্মশালায় মাদ্রাসাগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং ভাবধারা নিয়ে বিশদে আলোচনা করা হয় বলে খবর সংগঠন সূত্রে ।
আমিনপুর সিনিয়র মাদ্রাসার সেই বিজ্ঞপ্তি এদিকে, পরীক্ষা বন্ধ রেখে মাদ্রাসায় এই রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে যথারীতি নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে । এনিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চাও। এই প্রসঙ্গেই সিপিএমের জেলা নেতা আহমেদ আলি খান বলেন, "তৃণমূল তাঁর জমানায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে । শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকে তার প্রচেষ্টা চলছে। তা না-হলে পরীক্ষা বন্ধ রেখে মাদ্রাসায় তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারেনা । স্কুলের পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়ে তৃণমূল ব্যস্ত নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে। শাসকদলের কাছ থেকে এর বেশি আশা করা যায়না ।"
যদিও, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল । এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ বলেন, "কিছু লোকের কাজ হচ্ছে তৃণমূলের সমালোচনা করা । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মধারা এবং সৌহার্দ্য সম্প্রীতি সহ্য করতে পারছে না অনেকেই । তাই অভিযোগ করে সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করছে । পড়ুয়াদের পরীক্ষা হোক কিংবা পড়াশোনা।সমস্ত বিষয়েই আমাদের সরকার যথেষ্ট সহনশীল।পরীক্ষা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন ৷"
আরও পড়ুন:
- দ্রারিদ্রতাকে হারিয়ে হাই মাদ্রাসায় প্রথম হকারের ছেলে মুর্শিদাবাদের আশিক
- প্রকাশিত হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের ফল, বাড়ল পাশের হার
- মাদ্রাসা শিক্ষকদের বকেয়া মেটাচ্ছে না জেলা স্কুল দফতর, ঘেরাও ডেপুটি ডাইরেক্টরকে