পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Duttapukur Murder Case: খুনের পাঁচদিনের মাথায় কিনারা, গ্রেফতার দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুনের মাস্টারমাইন্ড - Duttapukur Murder Case

মোবাইল মেসেজের সূত্র ধরে পুলিশের জালে দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুনের মাস্টারমাইন্ড । পাঁচদিনের মাথাতেই খুনের কিনারা করে ফেলল পুলিশ ।

Duttapukur Murder Case
বারাসত পুলিশ

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 30, 2023, 7:52 PM IST

গ্রেফতার দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুনের মাস্টারমাইন্ড

বারাসত, 30 সেপ্টেম্বর:মোবাইল মেসেজের সূত্র ধরে অবশেষে দত্তপুকুর প্রৌঢ়া খুন-কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেফতার করল পুলিশ । ধৃতের নাম অনুপ দাস । বছর তেইশের এই যুবককে শুক্রবার রাতে দত্তপুকুরের নিবাধই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় । ঘটনার পাঁচদিনের মাথাতেই প্রৌঢ়া বেবিরানি সর্দার খুনের কিনারা করে ফেলল তদন্তকারী অফিসারেরা ।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবক নিহতের মেয়ে তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান দেবযানী সর্দারের প্রতিবেশী । সেই গোটা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর । খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও প্রৌঢ়ার চুরি যাওয়া মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।

মূলত চুরির উদ্দেশ্যেই গত 24 সেপ্টেম্বর শাসকদলের এই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে ঘটনার দিন সে প্রবেশ করেছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ । চুরিতে বাঁধা পেয়েই ইলেকট্রিকসিয়ান যুবক হাতুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে তৃণমূলের বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যের 55 বছরের মা বেবিরানি সর্দারকে । খুনের পর বাড়ির ছাদের দরজা দিয়েই পালিয়ে যায় সে । চিকিৎসার পর বড় মেয়ের বাড়িতে বিশ্রাম নিতে এসে প্রৌঢ়ার নৃশংসভাবে খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দেয় রাজ‍্য রাজনীতিতে । যথেষ্ট চাঞ্চল‍্যেরও সৃষ্টি হয় দত্তপুকুরের ব‍্যায়াম সমিতি এলাকায় ।

আরও পড়ুন:প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে খুন তাঁরই মা! মৃত্যু ঘিরে রহস্য দত্তপুকুরে

খুনের ঘটনার পরই প্রৌঢ়ার বড় মেয়ে দেবযানী সর্দার মায়ের মৃত্যুর পিছনে কারোর দিকে সেভাবে ইঙ্গিত না করলেও তিনিই যে দুষ্কৃতীদের টার্গেট ছিলেন তা জানাতে ভোলেননি । ছোট মেয়ে মন্দিরা সর্দার মায়ের খুনের পিছনে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পেয়েছিলেন । যদিও এ নিয়ে প্রথম থেকেই পুলিশ দাবি করে আসছিল, রাজনীতি নয় । খুনের পিছনে অন‍্য কোনও কারণ থাকতে পারে । খুনের মোটিভ জানতে এবং তার কিনারা করতে কোমর বেঁধে নামে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল । সেই কারণে পারিপার্শ্বিক তথ‍্য প্রমাণ ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের ওপর জোর দেয় তদন্তকারী সদস্যরা । খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিহত প্রৌঢ়ার 12 বছরের নাতনিকেও জেরা করা হয় দফায় দফায় । তাতেই মেলে খুনের সূত্র!

পুলিশ জানতে পারে, মাস তিনেক আগে প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান দেবযানী সর্দারের বাড়িতে ইলেকট্রিকের কাজ করেন অনুপ দাস । বেশ কিছুদিন সেই বাড়িতে ইলেকট্রিকের কাজ করায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাব জমে গিয়েছিল তার । বাড়ির প্রায় সবকিছুই নখ-দর্পণে করে ফেলেছিলেন তিনি । ফলে, ছাদের দরজা দিয়ে খুব সহজেই বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন এই যুবক । তদন্তে পুলিশের হাতে আরও বেশকিছু তথ্য উঠে আসে ।

আরও পড়ুন:গাড়ি না দেওয়ায় নাগেরবাজারে বৃদ্ধকে খুন ! পুলিশি জেরায় চালকের স্বীকারোক্তি

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, খুনের পর প্রৌঢ়ার চুরি যাওয়া মোবাইল থেকে নিহতের মেয়ে তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে প্রথমে হুমকি মেসেজ পাঠানো হয়েছিল । তারপর খুনির নাম বলে দেওয়ার অজুহাত দিয়ে মেসেজ পাঠিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকার দাবিও করা হয়েছিল ঘটনার পরপরই । এমন মেসেজ দেখে স্বভাবতই অদ্ভুত লাগে পুলিশেরও । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সেই মেসেজের পিছনে অন‍্য কেউ নন ! রয়েছেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের প্রতিবেশী যুবকই । দুয়ে দুয়ে চার করে ফেলে পুলিশ । তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুবক অনুপ দাসের নাম উঠে আসায় প্রথমে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয় । পরে গ্রেফতার করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ ।

এই বিষয়ে বারাসতে পুলিশ সুপারের দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন,"যেহেতু ওই প্রৌঢ়া অসুস্থ ছিলেন । সেই কারণে ঘটনার দিন তার শোয়ার ঘরের দরজা ভেজানো ছিল । সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রৌঢ়াকে খুন করে পালিয়ে যায় ধৃত যুবক । খুনের পিছনে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র হাতুড়িটি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা চলছে । তদন্তে আমরা সবদিকই খতিয়ে দেখছি । ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে । নতুন কোনও তথ্য উঠে এলে তা আমরা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেব ৷"

আরও পড়ুন:ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় বৃদ্ধাকে মারধর করে খুন আয়ার ! সিসিটিভি ফুটেজে সামনে এল তথ্য

এদিকে খুনির পাঠানো মেসেজের কথা স্বীকার করা হলেও পাঁচ লক্ষ টাকায় যে দাবি করা হয়েছিল, তা নিয়ে অবশ্য এদিন কোনও উচ্চবাচ্য করেননি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details