মুখভার ঢাকিপাড়ার, পুজোর বায়না আসেনি একটাও - dhakipara of machlandpur is in crisis
পুজোর বায়না আসেনি একটাও, মহিলা ঢাকিপাড়ায় আজ অন্য সুর ৷ বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে পুজো মণ্ডপে ঢাক বাজানোর জন্য ডাক পড়ত মছলন্দপুরের মহিলা ঢাকিদের । আজ কোরোনা আবহে ঢাকের বোলে তাল কেটেছে ৷ পুজো আর কয়েক মাস বাকি ৷ তবুও কোরোনা আবহে এখনও কোনও বায়না আসেনি ৷ তাই, ঢাকিপাডার আজ মুখভার।
মছলন্দপুর, 27 জুলাই : উমার বন্দনায় অন্য উমাদের ঢাকের বোল নজর কেড়েছিল পুজো উদ্যোক্তাদের । গত কয়েক বছর ধরে তাই দেশ-বিদেশের পুজোমণ্ডপে ডাক পড়ত মছলন্দপুরের মহিলা ঢাকিদের । কোরোনা আবহে ঢাকের বোলে তাল কেটেছে । অন্য উমারা জীবিকা হারিয়ে পেটের দায়ে আজ পথভোলা পথিক । সেলাইয়ের কাজ বা ফুলের মালা বেচে রুটিরুজি খুঁজছেন।
উত্তর 24 পরগনার মছলন্দপুর স্টেশনের পাশের ঢাকিপাড়ার সুনাম রাজ্যজুড়ে । কলকাতার বড় পুজো উদ্যোক্তারা রথযাত্রার পর থেকে ঢুঁ মারতেন শিয়ালদা থেকে 54 কিলোমিটার দূরের এই রেলপাড়ে। সব মিলিয়ে সাড়ে চারশো ঢাকির বাস। গত কয়েক বছর ধরে ঢাকিপাড়ার কৌলিন্য বাড়িয়েছেন মহিলা ঢাকিরা। মানসী, বাসন্তী, রুমা, বিশাখা ও সান্ত্বনাদের ঢাকের বোল শোনা গিয়েছে রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো শহরেও। সাগরপাড়ের সাহেবদের মুলুকেও তাঁরা ডাক পেয়েছেন। সারা বছর টুকটাক কাজ তো পানই। ঢাকিপাড়ার বাসিন্দারা মূলত পুজোর ওই ক'দিনের ভরসায় থাকেন। ফি বছর রথযাত্রার পর থেকে পুজোর বায়না শুরু হয়ে যায়। ঢাকিপাড়ায় থাকে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। কিন্তু চলতি বছর কোরোনা আবহে সেই ব্যস্ততা আর নেই। গত চার মাস ধরে ঢাকিপাড়ায় একটাও পুজোর বায়না আসেনি। রথযাত্রার পরে বিদেশের ডাক তো দূর অস্ত, কলকাতার কোনও পুজো উদ্যোক্তাও মহল্লায় পা রাখেননি। তাই, ঢাকিপাডার আজ মুখভার। পুরুষরা তো বটেই, জনপ্রিয় মহিলা ঢাকিরাও আজ পেটের দায়ে জীবিকা বদল করেছেন। কেউ পরিচারিকার কাজ নিয়েছেন। কেউ বা সেলাইয়ের কাজ করে রুটিরুজি খুঁজছেন। কেউ আবার ফুলের মালা গেঁথে বিক্রি করছেন।