পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

পৌরভোটে আসন সংরক্ষণ, বিপাকে শাসকদলের কাউন্সিলররা - delimitation of municipality

আসন সংরক্ষণের যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে,তার মধ্যে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও বনগাঁ পৌরসভায়। স্বাভাবিকভাবে এই তিন পৌরসভায় মহিলা প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে রাজনৈতিক দলগুলিকে। বারাসত পৌরসভার মোট ওয়ার্ড 35 টি। জেলা প্রশাসনের প্রকাশিত তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, 16 ও 34 নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা তপশিলিদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, এই পৌরসভার জেনেরাল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলি হল যথাক্রমে 1,4,8,11,14,18,22,25,28, 31।

Barasat Municipality
বারাসত পৌরসভা

By

Published : Jan 20, 2020, 8:48 PM IST

বারাসত, 20 জানুয়ারি : আসন সংরক্ষণের গেরোয় পড়ে পৌরভোটে লড়াই করতে পারছেন না শাসকদলের অনেক কাউন্সিলর। গেরুয়া শিবির অবশ্য বলছে, তাঁরা সকলেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন । যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পালটা গেরুয়া শিবিরকেই নিশানা করেছে শাসক শিবির। আর এই চাপানউতোরের মধ্যেই পৌরভোটের দামামা বেজে গেছে। বারাসত পৌরসভা সহ বেশ কয়েকটি পৌরসভার আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকাও ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। আর সেই সংরক্ষণের গেরোয় পড়ে এবার নিজের ওয়ার্ডেই দাঁড়াতে পারছেন না বারাসত পৌরসভার উপ পৌরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়।

গতবার পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে উপ পৌরপ্রধান হয়েছিলেন অশনিবাবু। এবার তাঁর ওয়ার্ডটি মহিলাদের (জেনেরাল) জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ফলে, বিপাকেই পড়েছেন অশনিবাবু। তাঁর মতো পৌরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও সংরক্ষণের আওতায় পড়ে ভোটে লড়তে পারবেন না। তাঁদের ওয়ার্ডগুলির কোনওটি মহিলা তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে, আবার কোনওটি জেনেরাল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। আর এনিয়েই শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টানছে গেরুয়া শিবির। যদিও, তা মানতে নারাজ শাসক শিবির। প্রশাসনিক ব্যাপার বলেই বিষয়টি এড়িয়ে গেছে তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, আসন সংরক্ষণের যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও বনগাঁ পৌরসভায়। স্বাভাবিকভাবে এই তিন পৌরসভায় মহিলা প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে রাজনৈতিক দলগুলিকে। বারাসত পৌরসভার মোট ওয়ার্ড 35 টি। জেলা প্রশাসনের প্রকাশিত তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, 16 ও 34 নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা তপশিলিদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, এই পৌরসভার জেনেরাল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলি হল যথাক্রমে 1,4,8,11,14,18,22,25,28, 31। তারমধ্যে উপ পৌরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়ের 25 নম্বর ওয়ার্ডটিও মহিলাদের(জেনেরাল) জন্য সংরক্ষিত। এনিয়ে উপ পৌরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমি শুনেছি আমার ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। তবে, এখনও খসড়া তালিকা দেখে উঠতে পারিনি। যদি তালিকা নিয়ে আমার মধ্যে কোনও দ্বিধা থাকে, তখন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই আবেদন করা হবে।" শুধু বারাসত নয়, মধ্যমগ্রাম পৌরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডও সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। পৌরসভার 28 টি ওয়ার্ডের মধ্যে 4,13,17,22 নম্বর ওয়ার্ড মহিলা তপশিলিদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। বাকি ওয়ার্ডগুলির মধ্যে 2,6,9,12,16,20,24,27 নম্বর ওয়ার্ডগুলি মহিলা জেনেরালদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। 2 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম। এবার তাঁর ওয়ার্ডটিও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ফলে,এই ওয়ার্ড থেকে তিনি আর দাঁড়াতে পারবেন না। আসন সংরক্ষণের প্রকাশিত খসড়া তালিকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তিনি 30 জানুয়ারির মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

বারাসত পৌরসভা

শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই অনেক কাউন্সিলর এবার ভোটে দাঁড়াতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে যাঁরা ভোটে দাঁড়াতে পারছেন না তাঁরা আসলে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার। খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরই শাসকদলের মধ্যে গন্ডগোল বেধে গেছে ৷" শংকরবাবুর অভিযোগ, " শাসকদলকে সুবিধা করে দিতেই এই খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এই খসড়া তালিকা মানছি না। এর বিরুদ্ধে সঠিক জায়গায় অভিযোগ জানাব। প্রয়োজনে আদালতের যাওয়ারও ভাবনা রয়েছে আমাদের ৷" তিনি আরও বলেন, "অনেকেই দাঁড়াতে পারবে না বুঝতে পেরে BJP-র সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। তাঁদের প্রার্থী করার কোনও প্রশ্নই নেই। সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তিদেরই প্রার্থী করা হবে ৷"

যদিও শংকরবাবুর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে পৌরসভার উপ পৌরপ্রধান ও বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, "এটা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। প্রত্যেকবারই কোনও না কোনও পৌরসভা আসন সংরক্ষণের আওতায় পড়ে। আমরা যারা মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করি, তাদের কাউকে না কাউকে এই বেড়াজালের মধ্যে পড়তে হয়। এর ভিতরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার নেই। যদি কারও মনে হয় সঠিকভাবে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়নি, তিনি জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তারপর যদি জেলা প্রশাসন মনে করে, খসড়া তালিকায় পরিবর্তন করা দরকার, তখন করতেই পারে।"

জেলা প্রশাসনের প্রকাশিত এই খসড়া তালিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাঁদের অভিযোগ, এই খসড়া তালিকা পক্ষপাত দুষ্ট ও প্রতিহিংসাপরায়ণ। শাসকদলকে তুষ্ট করতেই এমন খসড়া তালিকা বানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে এই খসড়া তালিকা বাতিলের দাবি জানাতে পারে বিরোধীরা।

ABOUT THE AUTHOR

...view details