শাসন (উত্তর 24 পরগনা), 23 মার্চ: গুলি, বোমা, সন্ত্রাস, খুন আর শাসন একসময় সমার্থক ছিল ৷ উত্তর 24 পরগনার বারাসতের 2 নম্বর ব্লকে এই এলাকায় বামজমানায় আতঙ্কের আবহাওয়া ছিল বলে অভিযোগ ৷ বাম আমলে শাসন নাকি সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর ছিল ৷ আর এসবের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার ৷ এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব (CPIM and Trinamool Congress alleges each other in Shasan North 24 Parganas) ৷ কেমন আছে আজকের শাসন ? কী বলছেন সিপিএম নেতা ? আর শাসকদল তৃণমূলেরই বা কী দাবি ?
অতীত থেকে জানা যায়, বাম সরকারের আমলে শাসনে সন্ত্রাসের যাবতীয় ব্লুপ্রিন্ট হত কীর্তিপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভুবনপুর থেকে ৷ ভেড়ি বেষ্টিত এই ভুবনপুরে একসময় আধিপত্য ছিল আনন্দ চক্রবর্তীর ৷ তাঁর একটি বাড়িও রয়েছে ৷ এখন সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ বাম দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জমি, বাড়ি মিলিয়ে তাঁর প্রায় সাড়ে তিনশো বিঘার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায় ৷ আনন্দ চক্রবর্তীকে সেখান থেকে উৎখাত করে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি দখল করেছিলেন মজিদ মাস্টার ও তাঁর অনুগামীরা ৷ এসব 1998 সালের কথা ৷ প্রায় দশ বছর ধরে এই বাড়িটি থেকে তিনি লাগামহীন সন্ত্রাস পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ ৷ সেখানে যাবতীয় সরঞ্জামও মজুত করা থাকত ৷
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বোমা, অস্ত্র নিয়ে মজিদের বাহিনী শাসনের সর্দারহাটি, তেহাটা, দেওপুকুর, পাকদহ-সহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস চালাতে বেরিয়ে পড়তেন ৷ সেসব স্মৃতি এখনও টাটকা শাসনবাসীর মনে ৷ এই বিষয়ে স্থানীয় সাধন মণ্ডল বলেন, "বাম আমলে মজিদের সেই সব সন্ত্রাসের কথা মনে পড়লে এখনও আমাদের বুক ভয়ে কেঁপে ওঠে ৷ এখন আর শাসনে বোমা, গুলির শব্দ পাওয়া যায় না ৷ মানুষ শান্তিতে রয়েছে ৷ ভেড়ির খাজনার টাকা ঠিকঠাক বণ্টন হচ্ছে ৷" একই সুর শোনা গিয়েছে আরেক এলাকাবাসী তাপস পাত্রের গলায় ৷ তাঁর কথায়, "পরিত্যক্ত এই বাড়িতে একসময় মজিদ মাস্টার তাঁর বাহিনীকে এনে জড়ো করতেন ৷ তারপর এখান থেকে শাসনের গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস চলত ৷ সেসব দিনগুলি যে কীভাবে কাটিয়েছি ৷ তাই, আমরা যা দেখেছি, তা যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা না-দেখে ৷ এখন এলাকা শান্ত ৷"
আরও পড়ুন: শাসনে বামপন্থীদের বিশাল মিছিল, ডিজে বাজিয়ে নাচের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে