ভাটপাড়া, 3 জানুয়ারি : দিনভর নাটকের পর গতকালই ভাটপাড়া পৌরসভার আস্থা ভোট খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এনিয়ে তৃণমূল-BJP-র তরজা তুঙ্গে ৷ কলকাতা হাইকোর্টের রায়দানের পর আপাতত স্বস্তিতে গেরুয়া শিবির । তবে, এর মাঝেই আস্থা ভোট নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ BJP নেতা অর্জুন সিংয়ের ৷ তাঁর বক্তব্য, কাউন্সিলরদের বাধ্য করা হয়েছে । গান পয়েন্টে রেখে ভোট করানো হয়েছে । তাই শেষমেশ আইনের জয় হল।
গতকাল অর্জুন বলেন, "আদালতের রায়ের পর আমার আর কিছু বলারনেই ৷ আজ যে প্রক্রিয়ায় ভোট হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দিয়েছে আদালত ৷ প্রক্রিয়াটাই ভুল ৷" তাঁর দাবি, বুধবার রাতে 4 জন কাউন্সিলরকে গান পয়েন্ট রেখে ভোট দিতে বলা হয়েছিল ৷ এমনকি বাড়িতে গাঁজা রেখে তাঁদেরফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় এই ধরনের রাজনীতিশুরু করেছেন ৷ আমাদের কাছে একমাত্রপথ ছিল আইনের দ্বারস্থ হওয়া ৷ শেষমেশ তার ফল পেয়েছি ৷
এই সংক্রান্ত পড়ুন : অগণতান্ত্রিকভাবে ভাটপাড়া দখলের চেষ্টা চলছে, অভিযোগ মুকুলের
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন উত্তর 24 পরগনার জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ৷ এই প্রসঙ্গে অর্জুন সিং জানান, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বুঝতে হল তো আইন আছে ৷ পুলিশ, মাফিয়াকে দিয়ে গুন্ডামি করে যদি ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাহলে ভারতে তাদের কোনও জায়গা নেই ৷
ভাটপাড়া টাউন তৃণমূল সভাপতি দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, "আমি এখনও রায় পড়ে দেখিনি ৷ তবে শুনেছি । দল যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে ৷ প্রয়োজন হলে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়া হবে ৷" দেবজ্যোতির বক্তব্য, পৌরসভা ছিনিয়ে নেওয়ার কোনও গল্প নেই । 19 কাউন্সিলর আজ ভোটাভুটিতে অংশ নিয়েছিল ৷ আরও পাঁচজন কাউন্সিলর আমাদের সঙ্গে আছে ৷ 24 জন কাউন্সিলরের সমর্থন রয়েছে আমাদের সঙ্গে । আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, পৌরসভা বোর্ড আমরা নিচ্ছি ৷ মানুষের সমর্থন আমাদের দিকে ৷ বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে ৷ অর্জুন সিং বড় বড় কথা বলছে ৷ বিজপুর, হালিশহর, নৈহাটিতে যেমন পরাজয় মেনে নিয়েছে ঠিক তেমনি ভাটপাড়ার পরাজয়টাও খুব মেনে নিতে হবে ৷
গতকাল প্রথমে জানা যায় ভাটপাড়া পৌরসভা ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল । পরে রাজ্য BJP-র তরফে আইনজীবী সপ্তাংশু বসু ভাটপাড়া পৌরসভার আস্থা ভোট অসাংবিধানিক বলে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ৷ বেলা 4টেয় শুরু হয় মামলার শুনানি ৷ দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি অরিন্দম সিনহা বলেন, "30 ডিসেম্বর কয়েকজন কাউন্সিলর যে নোটিশ দিয়েছেন সেটা খারিজ করা হল । ফলে এই নোটিসের ভিত্তিতে যা কিছু করা হয়েছে সবটাই আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ ।" এরপরই খানিকটা হলেও অক্সিজেন মিলল গেরুয়া শিবিরে ।