হাবড়া, 6 সেপ্টেম্বর : সম্প্রতি কোরোনা সন্দেহে এক বৃদ্ধকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে কেউ সাহায্য না করায় তিনি পড়ে যান । পরে তাঁর মৃত্যু হয় । যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল । অনেকেই তখন প্রশ্ন তোলেন, কোরোনা রোগীকে এভাবে অবহেলা কেন? ওই ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল । এবার অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে কোরোনা আক্রান্তের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল । ওই মহিলাকে হাবড়া হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা হয়েছিল অশোকনগরের কোরোনা হাসপাতালে । কিন্তু তিনি অ্যাম্বুলেন্স পাননি বলে অভিযোগ । শেষে শুক্রবার ভোররাতে হাবড়া হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় । ঘটনায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মৃতের পরিবার ।
অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা যায়নি, মৃত্যু কোরোনা রোগীর - coronavirus treatment
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দপ্তরের কন্ট্রোল রুমে ফোন করা হলেও অ্যাম্বুলেন্স সময়মতো পৌঁছায়নি ।
হাবড়া থানা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা সাতদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন । বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । চিকিৎসকরা তাঁর উপসর্গ দেখে কোরোনা পরীক্ষা করতে বলেন । রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । এরপর তাঁকে অশোকনগর কোরোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । হাবড়া হাসপাতালে কোরোনা রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা ছিল না । এই অবস্থায় স্বাস্থ্য দপ্তরের কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন রোগীর সদস্যরা । অভিযোগ, কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও অ্যাম্বুলেন্স আসেনি । অন্যদিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে । মৃতের ছেলে মফুজ়ার রহমান বলেন, "চিকিৎসক মাকে স্থানান্তর করার পরেই কন্ট্রোল রুমে ফোন করেছিলাম । কিন্তু আমাদের বলা হয় কখন অ্যাম্বুলেন্স যাবে ঠিক নেই । মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে বুঝে ফের অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন করি । কিন্তু তখনও বলা হয় আরও দুই-তিন ঘণ্টা সময় লাগবে । রাত তিনটে নাগাদ মায়ের মৃত্যু হয় । সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পেলে হয়তো মাকে বাঁচানো সম্ভব হত ।"
মৃতের এক আত্মীয় কামাল বৈদ্য বলেন, "রোগীর মৃত্যু হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত তিনটে নাগাদ । আর অ্যাম্বুলেন্স এসেছে তার এক ঘণ্টা পরে । অ্যাম্বুলেন্স যদি সঠিক সময়ে পাওয়া না যায় তাহলে সেই পরিষবা রেখে কী লাভ?" হাবড়া হাসপাতালের সুপার শংকরলাল ঘোষ বলেন, "গত সাত দিন ধরে ওই মহিলা জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগলেও পরিবারের সদস্যরা তাঁর কোরোনা পরীক্ষা করাননি । রাত দেড়টা নাগাদ তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে । কোরোনা আক্রান্তদের জন্য কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স আনতে হয় । সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই । রোগী যতক্ষণ হাবড়া হাসপাতালে ছিলেন ততক্ষণ আমরা চেষ্টা করেছি ।"