বারাসত, 28 মার্চ: তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভার দিনই পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা পিছিয়ে গেল ! বুধবারের নির্ধারিত পরীক্ষা সূচি পরিবর্তনের পর এই নিয়ে যথারীতি বিতর্ক দানা বেঁধেছে । এইদিনেই কলকাতার শহিদ মিনারে রয়েছে তৃণমূলের ছাত্র-যুব সমাবেশ ৷ যেখানে মূল বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee meeting in Kolkata) ৷
ফলে এই পরীক্ষা বাতিল নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতির অন্দরে । বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠনগুলি ইতিমধ্যে পরীক্ষা পরিবর্তনের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুঁজে পাচ্ছে ! যদিও তা মানতে চায়নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ । তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্যই হয়তো প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষার দিন পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে । এই নিয়ে অযথা রাজনীতি করা হচ্ছে (West Bengal State University) ।
সূত্রের খবর,পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির অনার্স এবং পাস কোর্সের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল বুধবার । কিন্তু বিএ, বিএসসি, বিকম এই তিনটি স্নাতক স্তরের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষাই এই নির্দিষ্ট দিনে না হয়ে সূচির পরিবর্তন ঘটেছে । সূচি পরিবর্তিত হয়ে সেই পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছে 31 মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার । বিষয়টি অবশ্য দু'দিন আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে । তবে, সেই বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্টভাবে কোনও কারণ উল্লেখ নেই । যা নিয়েই এখন জোর চর্চা চলছে ।
এদিকে, যেদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছে সেদিনই আবার তৃণমূলের ছাত্র-যুবর সমাবেশ রয়েছে কলকাতার শহিদ মিনারে । তৃণমূলের সভার জন্যই কি বিশ্ববিদ্যালয় ও তাঁদের অধীনস্থ কলেজগুলির পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হল কর্তৃপক্ষ ? যাতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলি থেকে পড়ুয়ারা সেই সভায় যোগদান করতে পারেন ? পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের পর এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলে । বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলিও বিষয়টি নিয়ে দুয়ে দুয়ে চার করতে শুরু করেছে । যদিও এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷
আরও পড়ুন:ডিএ-ধরনা মঞ্চের পাশেই তৃণমূলের সমাবেশ, হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে চলছে প্রস্তুতি
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম । তিনি বলেন,"কেন পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে । তবে,যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও সমস্যা থাকতে পারে । আমার মনে হয়না পরীক্ষা একদিন পরে হলে ছাত্রদের খুব একটা সমস্যা হবে । কেউ কেউ এর পিছনে রাজনীতির রঙ লাগানোর চেষ্টা করছে । তাঁরা খুব একটা সফল হবে না ৷" অন্যদিকে,পরীক্ষা পিছনোর সমালোচনা করে তৃণমূলকে নিশানা করেছে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি । এই বিষয়ে সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি উৎপল রায় জানান, পড়ুয়াদের পরীক্ষা নিয়েও ছিনিমিনি করছে শাসকদল । এটা খুবই লজ্জার । রাজনৈতিক সভা রাজনীতির মতো করে হবে । পরীক্ষা হবে পরীক্ষার মতো । এরজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হবে কেন ? প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে যা খুশি তাই করছে রাজ্যের শাসকদল ।