গোবরডাঙা , 21 জানুয়ারি : রাজ্য সরকারের প্রকল্প কর্মতীর্থ ভবন নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে সোমবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর 24 পরগনার গোবরডাঙা থানার নকপুল এলাকা ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা নবনির্মিত কর্মতীর্থে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগানোর চেষ্টা করে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় পুলিশ ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ৷ কিন্তু ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ৷ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় ৷ পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, "পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও র্যাফ ৷ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে ।"
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গোবরডাঙা থানার হাবড়া 1 নম্বর ব্লকের বেড়গুম 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চয়েতের বাসিন্দা নির্মলা দাস । কয়েক বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয় । তাঁর 58 শতক জমি ছিল । প্রায় 22 বছর আগে নির্মলা দাস জীবিত অবস্থাতেই বেড়গুম 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতকে তাঁর 58 শতক জমি দান করেছিলেন । স্থানীয়দের দাবি, ওই জমিতে তিনি বাজার ও মন্দির নির্মাণের কথা বলে গিয়েছিলেন । দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা 58 শতকের ওই ফাঁকা জমিটি সম্প্রতি উন্নয়নের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নেয় বেড়গুম 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত । সেই মতো সংখ্যালঘু বিষয়ক উন্নয়ন দপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের টাকায় 2019 সালে ওই জমিতে কর্মতীর্থ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল । বর্তমানে কাজ প্রায় শেষের পথে । সামনে গেট তৈরির কাজ চলছে । প্রায় চার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে ।
গত সপ্তাহে সেখানে সংখ্যালঘু বিষয়ক উন্নয়ন দপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি বোর্ড লাগানো হয় । ওই বোর্ড দেখেই এলাকার মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায় । গতকাল স্থানীয়দের একাংশ কর্মতীর্থের সামনে মছলন্দপুর-গাইঘাটা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । অন্যদিকে নকপুল লাগোয়া বেড়গুম 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনেও জড়ো হয় কয়েকজন । কিন্তু পঞ্চায়েত অফিস সে সময় তালাবন্ধ ছিল ৷ কেউ না থাকায় তারা ফিরে আসে কর্মতীর্থের সামনে ৷ অভিযোগ, এর পরই কর্মতীর্থে তারা ভাঙচুর চালায় ৷ এমনকী ভবনের একটি দরজায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করে ৷ রাস্তায় টায়ার জড়ো করে তাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷