বারাসত, 29 সেপ্টেম্বর:রাজ্যের অতি ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকার তালিকায় নাম রয়েছে বারাসত পৌরসভার । তারপরেও এই পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে যত্রতত্র ময়লা,আবর্জনা জমে থাকছে ! অপরিচ্ছন্ন নিকাশিনালাও । এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে এবার ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রচার অভিযানে গিয়ে শুক্রবার ক্ষোভের মুখে পড়লেন বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় । ময়লা, আবর্জনা সাফাই হওয়া নিয়ে জঞ্জাল বিভাগের কর্মীদের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে শুক্রবার পৌরসভার চেয়ারম্যানের সামনেই রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় মহিলারা । তাঁরা জানান, এলাকায় ভ্যাটের গাড়ি ঢুকলেও বাড়ির ময়লা,আবর্জনা নিয়মিত সংগ্রহ করা হয়না । ফলে ময়লা বাড়ির ভিতরেই রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা । এর জেরে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ । পরে সাফাই কর্মীদের ডেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তৃণমূল পরিচালিত এই পৌরসভার চেয়ারম্যান । তবে বারাসত যে ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকার তালিকায় আছে তা মানতে চাননি পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় ।
ডেঙ্গির চলতি মরসুমের প্রথম দিকে না হলেও সময় যত গড়িয়েছে, তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে এসেছে এই উত্তর 24 পরগনা জেলা । শেষ চার সপ্তাহের পরিসংখ্যানের নিরিখে যে ১৬টি পৌরসভা-কে অতি ডেঙ্গিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ১১টি-ই উত্তর ২৪ পরগনায় ! সম্প্রতি মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতর যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে । তাতে শেষ চার সপ্তাহে সংক্রমণের ধারাবাহিকতা পর্যালোচনা করে ১৬টি পৌরসভাকে অতি ডেঙ্গিপ্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । এর মধ্যে রয়েছে বারাসত পৌরসভাও । উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচটি পৌরসভায় ৩৮তম সপ্তাহে (২০ সেপ্টেম্বরের রিপোর্ট অনুযায়ী) আক্রান্ত বেড়েছে ।
বাকি ছ’টি পৌরসভার কোনওটিতে হয় সংক্রমণ সামান্য কমেছে । নতুবা প্রায় একই আছে । বাকি জেলাগুলির চারটি পৌরসভাতেও আক্রান্ত বেড়েছে । শুধু একটিতে কমেছে । স্বাস্থ্য দফতরের অতি ডেঙ্গিপ্রবণ তালিকায় বারাসতের নাম থাকতেই ডেঙ্গি প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ । প্রায় একমাস ব্যাপী 'ডেঙ্গি মিশন'-কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে পৌরসভার তরফে । পৌরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডেই একমাস ধরে বিশেষ অভিযান চালানো হবে । যার সূচনা হয় শুক্রবার থেকে। এদিন সকালে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য বালুড়িয়ায় ডেঙ্গির প্রচার অভিযানে যান বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন দুই পৌর পারিষদ অরুণ ভৌমিক এবং অভিজিৎ নাগ চৌধুরী । টোটোয় মাইকিং,ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো,মশা মারার তেল স্প্রে করা,আগাছা,জঙ্গল পরিষ্কার । সবকিছুই চলে চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে । তবে,তার মধ্যেও ওয়ার্ডের বিভিন্ন বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র ময়লা,আবর্জনা পড়ে থাকা,নিকাশিনালা ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ার দৃশ্যও ধরা পড়েছে ।