বারাসত, 9 মে : করোনা সন্দেহে মৃত মহিলার দেহ 16 ঘণ্টারও বেশি সময় পড়ে রইল ভাড়াবাড়িতে । দেহ উদ্ধার কিংবা সৎকারে এগিয়ে এলেন না প্রতিবেশীরা ৷ এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসত । এক্ষেত্রে স্থানীয় পৌরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উঠেছে অসহযোগিতার অভিযোগ । বারবার সহযোগিতা চেয়েও তা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের । শেষে সংবাদমাধ্যমের হস্তক্ষেপে 16 ঘণ্টা পর মহিলার দেহ উদ্ধারে উদ্যোগী হন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা । তবে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।
জানা গেছে, বারাসত পৌরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাণীকণ্ঠ নগরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বছর পঁয়তাল্লিশের আভা সাহা । স্বামী নারায়ণ সাহা বইয়ের দোকানের কর্মচারী । তাঁর সামান্য রোজগারে সংসার চলে দম্পতির । পরিবারে আর কেউ নেই । কয়েকদিন ধরে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন আভা । বুধবার এলাকারই এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় মহিলাকে । সেই চিকিৎসক তাঁকে কোভিড টেস্টের পরামর্শ দেন । প্রেসক্রিপশনে সেকথা লিখেও দেওয়া হয় । কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য ও লোকবল না থাকায় মহিলার কোভিড টেস্ট করাতে পারেননি তাঁর স্বামী ৷ এরপর বিনা চিকিৎসায় শনিবার রাত দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই মহিলার । রবিবার সকালে সেকথা জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় । করোনা সন্দেহে মহিলার বাড়ির দিকে ঘেষতে ভয় পান প্রতিবেশীদের অনেকেই । স্ত্রীর দেহ আগলে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন একাকী স্বামী । এই সময়ের মধ্যে বিষয়টি স্থানীয় তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরকে জানানো হলেও তিনি কোনও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে । ফলে 16 ঘণ্টারও বেশি সময় মহিলার দেহ পড়ে থাকে ভাড়া বাড়িতেই ।
মৃতের স্বামী নারায়ণ সাহা বলেন, "পরিবারে স্ত্রী ছাড়া আমার আর কেউ নেই । ফলে আমার পক্ষে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি কিংবা কোভিড টেস্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি । রাত থেকে দেহ বাড়িতে পড়ে থাকলেও করোনার আতঙ্কে কেউ আসেনি ৷ কাউন্সিলরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল । কিন্তু তার কাছ থেকেও সদর্থক কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি ৷"