ব্যারাকপুর, 16 মে: বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার সংখ্যা অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে ৷ কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে বাবা-মায়ের বকুনি, প্রেমে আঘাত, স্কুল বা প্রাইভেট মাস্টারের শাসন, পরিচিত কারওর কাছে যৌন হেনস্তা ইত্যাদি বিষয়গুলি উঠে এসেছে ৷ কাউকে না বলতে পারায় ভিতরে ভিতরে গুমরে থাকতে থাকতে একসময় চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তারা ৷ কিন্তু এতে কোনও সমস্যার সমাধান তা হয়ই না বরং বাবা-মায়ের কোল খালি হয়ে যায় ৷ পরিবার হারিয়ে ফেলে তাদের প্রিয়জনকে ৷
এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবার নয়া উদ্যোগ নিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷ মঙ্গলবার উদ্বোধন হল তাদের নয়া প্রকল্প 'মনের কথা পুলিশ দিদির সাথে' ৷ এই প্রকল্পে কিশোর-কিশোরীরা তাদের মনে কথা বলতে পারবে পুলিশ দিদি অর্থাৎ মহিলা পুলিশের সঙ্গে ৷ তার জন্য দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ফোন নম্বরও ৷ সেটি হল 9147890326 ৷ প্রয়োজনে হোয়াটস অ্যাপও করা যেতে পারে ৷ সেই নম্বরটি হল 9147889554 ৷ এখানে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্যা যা তারা বাড়িতে বা কাউকে বলতে পারছে না সেগুলি বলতে পারবে ৷ সে অভিমানই হোক বা অন্য কোনও কারণ ৷
কারওর সঙ্গে নিজেদের দুঃখ-কষ্ট শেয়ার করলে মন অনেকখানি হালকা হয় ৷ মাথা হয় কিছুটা চাপমুক্ত ৷ এই বিষয়টা আমরা সবাই জানি ৷ তাই এহেন উদ্যোগের মাধ্যমে ছোটখাটো কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে বলেই মনে করছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷
এই প্রকল্পের এক পুলিশ দিদির কথায়, কিছুদিন আগে সোদপুরের সুখচরে বেশি মোবাইল দেখার জন্য মা বকাবকি করেছিলেন মেয়েকে । অভিমানে সেই ছাত্রী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে । অপর একটি ঘটনায় মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেছিল এক স্কুল ছাত্র । পরিবারের লোকজন রাজি হননি । আর সেই অভিমানে ওই স্কুল ছাত্র আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় । দু'টি ঘটনাই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার । এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় ৷ এই শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা আকছার ঘটছে ।
নিজের পছন্দমতো কোনও কিছু না পেলেই অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে ভবিষ্যতের কারিগররা । কমিশনারেট এলাকায় একাধিক থানায় এহেন আত্মহত্যার ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হচ্ছে । ফলে দেশের ভবিষ্য়তদের অকালে ঝরে যাওয়া থেকে বাঁচাতেই তাদের মনের কথা শুনবে পুলিশ ৷ সেই জন্যই এই উদ্যোগ ।