বারাসত, 8 ডিসেম্বর: তিন বছরও কাটেনি ৷ তারই মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চালু হওয়া ইতিহাস সমৃদ্ধ বারাসতের সিরাজ উদ্যান পার্ক(Barasat Siraj Udyan Park Closed)। কবে এই পার্ক ফের চালু হবে সেই বিষয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও মূলত আর্থিক সমস্যাই পার্কের রক্ষণাবেক্ষণে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে পৌরসভা সূত্রে । ফলে, শীতের মরশুমে ঐতিহ্যবাহী এই পার্কের গেটে তালা ঝোলানো থাকায় খালি হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । বিষয়টি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা । এই ইস্যুতে তৃণমূল পরিচালিত বারাসত পৌরসভার দিকে আঙুল তুলে শাসকদলকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির।
বারাসত চাঁপাডালি বাসস্ট্যান্ডের ঠিক পাশেই রয়েছে ইতিহাস সমৃদ্ধ সিরাজ উদ্যান পার্ক (Siraj Garden)। 2019 সালের 12 জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি মাধ্যমে উদ্বোধন করেন এই পার্কের । পার্কের সূচনা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, স্থানীয় বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে । আমোদ প্রমোদের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় পার্ক জেলার সদর শহর বারাসতে। পার্কের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে নানান ইতিহাস । বিশেষত সেই ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বাংলার নবাব সিরাজউদদ্দৌলা ।
আরও পড়ুন :অমিল সরকারি সাহায্য ও পরিষেবা, শান্তনু ঠাকুরের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ গ্রামবাসীদের
কথিত আছে, 1757 সালে মুর্শিদাবাদে যাওয়ার সময় বাংলার নবাব নিজের হাতি এবং ঘোড়ার বিশ্রামাগার হিসেবে বারাসতের হাতিপুকুর এলাকাকে বেছে নিয়েছিলেন । যেহেতু সেখানে একটি পুকুর ছিল । সেই পুকুরের জল হাতি ও ঘোড়াদের খাওয়ানোর জন্য ব্যবহার করা হত । তাই তার নামকরণ হয় হাতিপুকুর । এলাকাটি বাংলার নবাব সিরাজউদদ্দৌলার পছন্দ হওয়ায় দীর্ঘদিন সেখান কাটিয়েছিলেন তিনি । নবাবের যুগ শেষ হলেও এখনও মানুষ সেই এলাকাটিকে হাতিপুকুর হিসেবেই চেনে । সিরাজউদদ্দৌলার ইতিহাসকে সামনে রেখেই তাঁর নামে সেজে উঠে পার্কটি । পার্কের ঠিক মাঝেই রয়েছে বিশালাকার সেই পুকুরটি । যেটি নতুনভাবে সংস্কার করে তার চারপাশে সিরাজউদদ্দৌলার বিভিন্ন সমৃদ্ধ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । এছাড়াও আমোদ প্রমোদের জন্য সেখানে রয়েছে বোটিং থেকে শুরু করে টয়ট্রেন-সহ বিভিন্ন ধরনের রাইডস ৷ মনোরঞ্জনের জন্য এই পার্কটি কাছাকাছি হওয়ায় একসময় বারাসত ছাড়াও আশপাশের লোকজন ভিড় করতেন এখানে । কিন্তু পার্কে ঢোকার দুটি গেটেই এখন ঝুলছে বড় বড় তালা । কাউন্টারও পড়ে রয়েছে বন্ধ অবস্থায় । হাপিত্যেশ করা ছাড়া কোনও উপায় দেখছেন না ভ্রমণ পিপাসু সাধারণ মানুষ ।