পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Arsenic in Ichamati: ইছামতী নদীতে মিলছে আর্সেনিক, বিষ-জলে উদ্বিগ্ন প্রশাসন - Arsenic found in Ichamati river

ইছামতী নদীতে মিলেছে আর্সেনিক । আতঙ্কিত এলাকাবাসী থেকে প্রশাসন । এই জলই আবার চাষের জমিতে কাজে লাগে । ফলে ইছামতি আর্সেনিকমুক্ত না-হলে বড় সমস্যা তৈরির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই ।

Arsenic found in Ichamati
ইছামতী নদীর জলে মিলেছে আর্সেনিক

By

Published : May 25, 2023, 5:44 PM IST

ইছামতী নদীর জলে মিলেছে আর্সেনিক

বনগাঁ, 25 মে: স্রোত হারিয়ে নদীবক্ষে কচুরি পানা জমে আগেই নব্যতা হারিয়েছে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গর্বের ইছামতী । বনগাঁ মহকুমায় প্রায় 85 কিলোর জুড়ে রয়েছে ইছামতী নদী। এরই মাঝে অতিমাত্রায় ইছামতীর জলে মিলেছে আর্সেনিক। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের । পাশাপাশি সেই জল চাষের কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় আতঙ্কিত চাষিরাও ।

পৌরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, অমৃত প্রকল্পের মাধ্যমে ইছামতী নদীর জল পরিস্রুত করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল পৌরসভা। সেই কারণে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট ইছামতী নদীর জল পরীক্ষার জন্য যাদবপুর ইউনিভার্সিটি ও খড়গপুরে আইআইটির স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরে পাঠিয়েছিল । শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা তিনটি মরশুমে ইছামতীর জল আলাদা আলাদা করে পাঠানো হয়। বনগাঁ পৌরসভার পৌরপ্রধান গোপাল শেঠ জানান, "সেই রিপোর্টে ইছামতীর জলে 27 শতাংশ আর্সেনিক মিলেছে । যা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেশি । তবে বর্ষার সময় আর্সেনিকের মাত্রা অনেকটা কমে যায় ।"

তিনি জানান, পৌরসভার পক্ষ থেকে ইছামতী নদীকে আর্সেনিক মুক্ত করার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে । ইছামতী নদীতে কৃত্রিম ঢেউ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে । পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে জল তুলে নিয়ে এসে পরিশুদ্ধ করে ইছামতী নদীতে যাতে ফেলা যায় তার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এবং পুকুরের জন্য তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পাশাপাশি, শোধিত জল ইছামতী নদীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন করে বেশ কিছু নিকাশি নালা তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ।

আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটির রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বলেন, "ভারতবর্ষ এবং পশ্চিমবঙ্গে আর্সেনিক মিশ্রিত জল আমরা ভূগর্ভে পেয়েছিলাম। ভূপৃষ্ঠস্থ জলে সাধারণত আর্সেনিক থাকার কথা নয়। তবে নদীতে জোয়ার-ভাটা না খেললে বিভিন্ন চাষের জন্য ভূগর্ভ থেকে তোলা আর্সেনিক যুক্ত জল নদীতে মিশে নদীর জলে আর্সেনিক দূষণ হয় ।" অশোক বাবুর কথায়, নদীর জলে আর্সেনিক মিশলে স্নানের ক্ষেত্রে তেমন কোনও অসুবিধা না-হলেও যদি এই জল কেউ খায় তাহলে শরীরে আর্সেনিক দেখা দেবে । আবার এই জল দিয়ে যদি চাষ করা হয় তাহলে, চাষের ফসলের মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরে আর্সেনিক প্রবেশ করতে পারে । গরু আর্সেনিক যুক্ত জল খেলে তার দুধেও আর্সেনিক মিশে যাবে। আর সেই দুধ মানুষ খেলে মানুষের শরীর আর্সেনিক প্রবেশ করবে।"

ইছামতীর জলে আর্সেনিক মেলায় আতঙ্কিত চাষিরা । তারা বলছেন, চাষের জন্য নদীর জলই ভরসা । নদীর জল দূষিত হলে তাদের চাষের ক্ষতি হবে । চাষিরা জানাচ্ছেন, তাদের উৎপাদিত ফসল শুধুমাত্র তারা বিক্রি করেন না । নিজেরাও খান । সেক্ষেত্রে তারাও আর্সেনিকে আক্রান্ত হতে পারেন । তারা চাইছেন, প্রশাসন নদী সংস্কার করুক । আগের মতো নদীতে জোয়ার-ভাটা খেলুক ।

আরও পড়ুন: শরীরে থাইরয়েড বাসা বেঁধেছে ? সহজ কিছু অভ্যাসেই বাগে আসবে রোগ

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বনগাঁর বাসিন্দা আইনজীবী দীপাঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, "প্রশাসনের উচিত বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া। আর্সেনিক যুক্ত জল পরিশ্রুত করার জন্য সরকারের যে প্রকল্প আছে সেই প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করা। পাশাপাশি প্রচারের মাধ্যমে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক করা। মূলত, আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নিয়ম অনুয়ায়ী প্রতি লিটার জলে 0.01 মিলিগ্রাম আর্সেনিক থাকলে তা স্বাভাবিক হিসাবে ধরা হয়।

ABOUT THE AUTHOR

...view details