পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Jun 23, 2023, 9:15 PM IST

ETV Bharat / state

Barrackpore Doctor Murdered: বারাসতের মহিলা চিকিৎসক খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সেনা ডাক্তার

বৃহস্পতিবার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল বারাসতের এক মহিলা চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ । খুনের অভিযোগ করেছে পরিবার । ঘটনার পর থেকে খোঁজ ছিল না লিভ-ইন পার্টনার সেনাকর্তার । এরপর শুক্রবার সেনা ডাক্তারকে গ্রেফতার করল ব্যারাকপুর থানার পুলিশ ।

Barrackpore Doctor Murdered
মহিলা চিকিৎসক খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সেনা ডাক্তার

মহিলা চিকিৎসক খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সেনা ডাক্তার

ব্যারাকপুর, 23 জুন: ব্যারাকপুরে চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সেনা ডাক্তার । ডিভোর্সের পর ভারতীয় সেনা ডাক্তারের সঙ্গে লিভ টুগেদার থাকতেন ব্যারাকপুরে, সেখানেই মৃত্যু । প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার কথা উঠলেও, মেয়ের মায়ের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সেনা ডাক্তারকে শুক্রবার গ্রেফতার করল ব্যারাকপুর থানার পুলিশ ।

গত সোমবার চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের (37) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ব্যারাকপুর সেনা ছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ‘ম্যান্ডেলা হাউস'-এর 20 নম্বর ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে । তিন লাইনের একটি হাতে লেখা ‘সুইসাইড নোট' প্যাডের ছেঁড়া পাতায় ভাজ করা অবস্থায় মৃতদেহের পাশে পরে ছিল । সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁসে ঝুলন্ত দেহটির পা মুড়ে রয়েছে বিছানার উপরে । তাতে নীল কালিতে লেখা ছিল, 'যে প্রহারের দাগ নিয়ে চলে গেলাম / এর শোধ কেউ নেবে / আমার মৃত্যুর জন্য কৌশিক দায়ী।' এই ঘটনা সামনে আসার পরেই তদন্তে নেমেছিল পুলিশ।

মৃত চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপার বাড়ি বারাসত দক্ষিণ পাড়া রোডে। সেখানে থাকেন মৃতার বাবা-মা। মা ঝর্ণা হালদার জানিয়েছেন, মেয়ে প্রজ্ঞাদীপা হালদারের প্রথম 2013 সালে বিয়ে হয় । কিন্তু সেই বিয়ে বেশিদিন টেকেনি । তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় । এরপর ব্যারাকপুরে সেনা হাসপাতালে কর্মরত কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় । মেয়ে প্রজ্ঞাদীপাও পেশায় একজন চিকিৎসক। বারাসত ব্লক 1-এর অন্তর্গত ছোট জাগুলিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি কর্মরত ছিলেন ।

মৃতার মা আরও জানান, কৌশিক বাবুর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর 2020 সাল থেকে ব্যারাকপুরেই থাকতেন মেয়ে । মেয়ের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল রবিবার । সোমবার সারাদিন ফোন করলেও মেয়েকে ফোনে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন প্রজ্ঞাদীপার মা। অবশেষে, মধ্যরাতে ফোন আসে মেয়ে সেনা হাসপাতালে রয়েছে । পরিবার-প্রতিবেশীরা ছুটে যায় ব্যারাকপুরে ।

ঝর্ণা দেবী অভিযোগ করে বলেন, "মেয়ের শরীরে এবং মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে । মেয়ে যেখানে থাকতো, সেই বাড়ি ব্রিটিশ আমলের বাড়ি, 11 ফুট উচ্চতায় ছাদ । সেখানে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় । মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না, তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।" মৃতার মা তাঁর মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন কৌশিককেই । বিষয়টি ঘিরে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার হবে । মা ঝর্ণা দেবী গোটা ঘটনাটি ব্যারাকপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর সঙ্গী ও লিভ-ইন পার্টনার কৌশিক সর্বাধিকারীকে । বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আটক করা হয় ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে । পরবর্তীতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । উত্তরে অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার করা হয় কৌশিককে । কৌশিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রজ্ঞাদীপার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন এবং তাঁকে আত্মহননে প্ররোচিত করেছিলেন । প্রজ্ঞাদীপা তাঁর সুইসাইড নোটেও কৌশিককে মৃত্যুর জন্য দায়ী করে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট থেকে মহিলা চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, পলাতক লিভ-ইন পার্টনার

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সেন্ট্রাল আশিস মৌর্য বলেন, "গত 20 তারিখ এই ঘটনায় কেস রেজিস্ট্রার করা হয়, যেখানে আত্মহননের প্ররোচনার অভিযোগ রয়েছে । সুইসাইড নোটেও অভিযুক্ত কৌশিকের নাম উল্লেখ করা আছে । বৃহস্পতিবার অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশিক সর্বাধিকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । শুক্রবার তাঁঁকে ব্যারাকপুর আদালতে 10 দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে পেশ করা হয়েছে।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details